মাগুরার শালিখায় আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে যাওয়া প্রায় ২০০ হেক্টর জমির আমন ও আউশ ধান বাঁচাতে নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে পার্শ্ববর্তী বেড়িবাধের উপরে ১০টি সেচ পাম্প বসিয়ে পানি অপসারণে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলা সদর আড়পাড়া ইউনিয়নের দরিশলাই ও ফুলবাড়িয়া গ্রামের অসংখ্য চাষিরা।
দিনভর মেশিন চালিয়ে সপ্নের ফসল বাঁচাতে নিরলসভাবে কাজ করছেন তারা। এদিকে কৃষকদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভূয়সিপ্রশংসাও করছেন অনেকে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টিও কামনা করছেন অনেকে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও যাচ্ছেন সেখানে করছেন আর্থিক-অনার্থিক সহযোগিতা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শালিখা উপজেলার ফটকী নদীর পাশ্ববর্তী বেড়িবাঁধের উপর ১০টি সেচপাম্প বসিয়ে পাইপ সেট করে উপজেলা সদর আড়পাড়া ইউনিয়নের দরীশলাই ও ফুলবাড়ী গ্রামের ষোলগাড়ে এবং কুমোরগাড়ে মাঠের পানি অপসারণ করে পার্শ্ববর্তী ফটকি নদীতে ফেলছেন তারা। কেউ পানির লাইন কাটছে, কেউ পাইপ মেশিনের সাথে সেট করছেন। অনেকে আবার মেশিন চালানোর তেলের ব্যাবস্থা করছেন। কেউ কেউ আবার তলিয়ে যাওয়া জমিতে নেমে দেখছেন পানির হ্রাসের পরিমাপ। দেখে মনে হচ্ছে দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ফসল বাঁচাতে দিকবেদিক ছুটাছুটি করছেন তারা।
উপজেলা সদর আড়পাড়া ইউনিয়নের দরিশলাই গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, এই মাঠে আমার প্রায় ছয় বিঘা জমি রয়েছে যার পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। যেখানে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এই ফসল যদি আমি বাঁচাতে না পারি তাহলে আমার পুরো টাকায় মার যাবে।
একই গ্রামের রমজান আলী বলেন, এই মাঠে আমাদের যাদের জমি রয়েছে আমরা সকলেই খুব সকাল থেকে সেচপাম্প লাগিয়ে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছি কারণ এই জমির ওপরেই আমাদের সংসার চলে পাশাপাশি আমাদের পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণের খরচ চলে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হাসনাত বলেন, বিষয়টি আমি জানার পরেই সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে ২০০ হেক্টর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে তবে ২০ হেক্টর জমির ধান একদমই পানিতে নিমজ্জিত। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে সেখানে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের অফিস থেকে ইতোমধ্যে তালখড়ি এবং গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের চাষিদেরকে ৩০০ কেজি আমন ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।
কেকে/এজে