গত ৮ জুলাই করাচির ডিফেন্স হাউজিং অথরিটির একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে পাকিস্তানি মডেল-অভিনেত্রী হুমায়রা আজগর আলীর পচাগলা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮–১০ মাস আগে মারা গেছেন হুমায়রা। পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও টিভি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
হুমায়রা আজগর আলীর মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ। এ প্রতিবেদনে বীভৎস চিত্র উঠে এসেছে। চলুন এক নজরে দেখে নিই হুমায়রা আজগর আলীর পচাগলা মরদেহর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট—
১. শরীর মারাত্মকভাবে পচে গিয়েছে।
২. মুখের পেশীগুলো সম্পূর্ণভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে।
৩. আঙুল ও নখ আলাদা হয়ে গিয়েছে।
৪. শরীরের কিছু অংশে মাংসপেশী ছিল না।
৫. হাড়গুলো স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে যাচ্ছিল।
৬. অটোলাইসিসে (জৈব প্রক্রিয়া) মস্তিষ্ক সম্পূর্ণভাবে পচে গিয়েছে।
৭. অভ্যন্তরীন অঙ্গগুলো কালো রঙে ভরা।
৮. হাড়ে কোনো ফ্রাকচার শনাক্ত করা যায়নি।
৯. মাথা ও মেরুদণ্ড অক্ষত। তবে মেরুদণ্ডের কোনো কোনো কর্ড পাওয়া যায়নি।
১০. বাদামি রঙের পোকামাকড় ছিল, বিশেষ করে চুলে। তবে শুককীট ছিল না।
জিও টিভির এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিনেত্রী হুমায়রার শরীরে পচনের মাত্রা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা অসম্ভব করে তুলেছে। তবে ডিএনএ প্রোফাইলিং এবং টক্সিকোলজি টেস্ট চলছে। হুমায়রার চুলের ফিতা, কাপড় এবং রক্তের নমুনা রাসায়নিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আরো গভীর প্রক্রিয়ায় কাজ চলমান রয়েছে।
হুমায়রা আজগর আলী যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেই ফ্ল্যাটের ভাড়া ২০২৪ সাল থেকে দেন না এই অভিনেত্রী। বাধ্য হয়ে বাড়ির মালিক আদালতের দ্বারস্থ হন। পরে আদালতের নির্দেশে গত ৮ জুলাই অ্যাপার্টমেন্টের দরজা ভেঙে ভেতর প্রবেশ করে হুমায়রার মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ। অ্যাপার্টমেন্টটিতে একাই বসবাস করতেন এই অভিনেত্রী। তার পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। বিস্ময়কর তথ্য হলো—হুমায়রার বাবা ডা. আজগর তার মেয়ের মরদেহ গ্রহণ করতেও অস্বীকৃতি জানান।
টিভি রিয়েলিটি শো ‘তামাশা ঘরে’ অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন হুমায়রা। ২০১৫ সালে তার অভিনীত ‘জালাইবি’ সিনেমা মুক্তি পায়। এ সিনেমা তাকে পরিচিতি এনে দেয়।
কেকে/এএম