আমাদের পরিচিত জুডো ও কুংফুর সঙ্গে কারাতের কি পার্থক্য? কুংফু হলো চৈনিক মার্শাল আর্ট বা মল্লযুদ্ধ যার উদ্ভব খ্রিষ্টীয় ৫ শতকে চিনের জেন উপাসনালয় শাওলিন টেম্পলে। চিনের শাওলিন টেম্পলের আদি প্রতিষ্ঠাতা ভারতীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু বোধি ধর্ম। তার প্রশিক্ষিত মার্শাল আর্টই কালের পরিক্রমায় কুংফু’র রূপ নিয়েছে।
আর জুডো হলো হালের জাপানি মল্লযুদ্ধ। এর ইতিহাস অপেক্ষাকৃত নবীন। ১৮৮২ সালে ডক্টর কানো জিগোরো এ কমব্যাট ক্রীড়াটি উদ্ভাবন করেন। জুডো অর্থ ‘জেনটেল ওয়ে’ আর ‘কারাতে শব্দাটি জাপানি, এর অর্থ খালি হাত। কারাতে হলো খালি হাতে এক ধরনের মার্শাল আর্ট বা মল্লযুদ্ধ যে মল্লযুদ্ধের উদ্ভোবের পেছনে একজন ভারতীয় বৌদ্ধ ভিক্ষুর প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কারাতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর বিচিত্র কলাকৌশলের কারণেই অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২য় বিশ্ব যুদ্ধের পর ওকিনাওয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপিত হয়। ওখানকার অফিসারদের মধ্যে কারাতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কাজেই কারাতে পৌঁছে যায় ইউরোপ, আমেরিকায়।
ছবি : সংগৃহীত
ষাট ও সত্তর দশকে ওরিয়েন্টার মার্শাল আর্ট হিসেবে কারাতে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠতে থাকে। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কারাতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং অভিনব বৈশিষ্ট্যের কারণেই অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মাজরিরাও এই খেলায় অংশ নেয়। মনে থাকার কথা ওকিনাওয়া দ্বীপটি ছিল রাইইউকিড রাজ্যে। দীর্ঘকাল রাইইউকিউ রাজ্যটি স্বাধীন ছিল। ১৯ শতকে রাইইউকিউ রাজ্যটি জাপানের অঙ্গীভূত হয়ে যায়। কুড়ি শতকে রাইইউকিউ রাজ্যের সঙ্গে জাপানের সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি হয়। এই প্রথম কারাতে এলো জাপানে। ওকিনাওয়ায় কারাতে গুরুদের জাপান সরকার জাপানে আমন্ত্রণ জানিয়ে কারাতে শেখার ব্যবস্থা করে।
কারাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মরক্ষার কৌশলটি পুরোপুরি রপ্ত করা যায়।
দেশের বর্তমান সমাজব্যবস্থায় মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা বেশ
ঝুঁকিপূর্ণ। ইভটিজিংসহ নানা উপদ্রব রয়েছে। তাই ভবিষ্যতে স্কুল ও কলেজের
মেয়েরা কারাতে প্রশিক্ষণ নিলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চলাফেরা করতে পারবে।
কারাতে আক্রমণ প্রতিরোধ কৌশল সম্বলিত একজাতীয় এশীয় খেলা। এ খেলায় হাত ও
পায়ের ব্যবহারেই মুখ্য।
১৯২৪ সালের পর থেকে জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ে কারাতে ক্লাব গড়ে ওঠে। তখন থেকেই কারাতেতে জাপানি স্টাইল এর ছোঁয়া লাগে। কারাতের উদ্ভব সম্পর্কে চীন ও জাপানে একটি উপকথা রয়েছে বৌদ্ধধর্মে। বৌদ্ধধর্মে প্রাণিহত্যা নিষিদ্ধ। তো খ্রিষ্টীয় ৫০০ শতকে বোধি ধর্ম যখন বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে হিমালয় অতিক্রম করে ভারত থেকে চিন গেলেও সেসময় শ্বাপদ সংকুল যাত্রাপথে বন্যপ্রাণী ও দস্যুতস্করের হাতে থেকে রক্ষার জন্য আত্মরক্ষার যে কৌশল অবলম্বন করেন পরবর্তীকালে সে পদ্ধতিই চীন ও জাপানে খালি হাতে আত্মরক্ষা বা কারাতে হয়ে ওঠে।
ছবি : সংগৃহীত
কারাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মরক্ষার কৌশলটি পুরোপুরি রপ্ত করা যায়। দেশের বর্তমান সমাজব্যবস্থায় মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ইভটিজিংসহ নানা উপদ্রব রয়েছে। তাই ভবিষ্যতে স্কুল ও কলেজের মেয়েরা কারাতে প্রশিক্ষণ নিলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চলাফেরা করতে পারবে। কারাতে আক্রমণ প্রতিরোধ কৌশল সম্বলিত একজাতীয় এশীয় খেলা। এ খেলায় হাত ও পায়ের ব্যবহারেই মুখ্য।