কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পানির সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়াইয়া অচেতন অবস্থায় অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে রৌমারী থানায় একটি মামলা করেন নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীর বাবা। পরে আসামি নয়ন মিয়া (১৭) নামের এক কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে, গত ১৪ জুন থানায় একটি নিখোঁজ (জিডি) সাধারণ ডায়েরি করেন নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা। ১৩দিন পর উদ্ধার হয় ওই শিক্ষার্থী।
গ্রেফতার আসামি নয়ন মিয়া উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের শৌলমারী সবুজপাড়া এলাকার জিয়ারুলের ছেলে।
নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীর বাবা ও ইজাহার সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (৭ জুন) ঈদের দিন দেড়টার দিকে সুতিরপার এলাকার সেতুতে আসামি নয়ন মিয়াসহ অজ্ঞাত আরও ১-২ জনের সঙ্গে দেখতে পান ওই নির্যাতিত শিক্ষার্থীকে। ওই সময় শিক্ষার্থীর বাবা তাদেরকে দেখে ফেলায় ওই এলাকার একটি বসতবাড়িতে দৌড়ে দিয়ে পালায় তারা। এ সময় ওই বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে কেউ আসেনি বলে অস্বীকার করেন মালিক। ওই দিন আর বাড়িতে ফেরেনি ওই শিক্ষার্থী। পরে বাড়িতে ফিরে না আসায় খোঁজ নিতে আসামি নয়ন মিয়ার বাড়িতে যান ওই শিক্ষার্থীর বাবাসহ পরিবারের লোকজন। এ সময় অস্বীকার করেন আসামী নয়ন ও তার বাবা জিয়ারুল। এরপর ওই শিক্ষার্থীর বাবাসহ স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে একটি নিখোঁজ (জিডি) সাধারণ ডায়েরি করেন নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীর বাবা।
আরো জানা যায়, গত মঙ্গলবার ( ১৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ময়মনসিংহের কোতয়ালী উপজেলার একটি গ্রাম থেকে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর ভাবির মোবাইল ফোনে জানানো হয় ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী তার কাছে এসেছে। পরে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে রৌমারীতে ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসেন ভাবি।
ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী তার বাবাকে জানায়, আসামি নয়ন মিয়া তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দেখিয়ে ঈদের দিন রাতে রৌমারী থেতে ঢাকাগামী বাসে উঠেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থী পানি খেতে চাইলে পানির বোতলে পানির নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খাওয়ায় আসামি নয়ন মিয়া। এতে অচেতন হয়ে পড়ে ওই শিক্ষার্থী। পরে ঘুম ভেঙে গেলে দেখে গাজীপুরের অজ্ঞাতনামা এক বাড়িতে রয়েছে ওই শিক্ষার্থী। পাশে দাড়িয়ে রয়েছে রাকিব হোসেন (২১) নামের যুবক। পরে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ওই যুবক। এতে রাজি না হওয়ায় একটি রুমে আটকে রেখে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে ও জোর করে একাধিকবার ধর্ষণ করে ওই রাকিব। এতে অসুস্থ্য হলে ওই শিক্ষার্থীকে খালাতো বোনে পরিচয়ে গাজীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যায় ওই যুবক। চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করে মঙ্গলবার (১৭ জুন) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ময়মনসিংহে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। পরে বুধবার (১৮ জুন) রৌমারীতে ওই শিক্ষার্থীর ভাবি। বর্তমানে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) লুৎফর রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি নয়ন মিয়াকে বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
কেকে/ এমএস