নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো ইসলামবিরোধী, সাংবিধানিক ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থি এবং জাতীয় সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন রামপুরা ও হাতিরঝিল থানা ইমাম-খতিব উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতী হাফিজুদ্দীন। তিনি বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পুরোটাই বাতিল করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বাদ জুমা রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত আয়োজিত এক মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মুফতী হাফিজুদ্দীন বলেন, বিভিন্ন ধর্মের নিজস্ব পারিবারিক আইন রয়েছে, যা হাজার বছর ধরে চর্চিত। সেই আইন বাতিল করে একক ধর্মনিরপেক্ষ পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব ধর্মীয় অনুশাসনে সরাসরি হস্তক্ষেপ। তিনি দাবি করেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় কোরআন-সুন্নাহ এবং পারিবারিক শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ধারণা উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সভ্যতা মানে শুধু আধুনিক পোশাক নয়, বরং তা আত্মসংযম, শালীনতা ও বিশ্বাসকে সম্মানের সঙ্গে ধারণ করার মধ্যেই নিহিত। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস করাই সভ্যতার নামে পশ্চাৎগামিতা।
মানববন্ধনে বক্তারা যৌনকর্মীদের শ্রমিক স্বীকৃতি, সমকামিতাকে বৈধতা এবং নারীদের তালাকের সমানাধিকারের প্রস্তাবনার তীব্র বিরোধিতা করেন। তারা অভিযোগ করেন, এসব প্রস্তাব মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতি ও সামাজিক কাঠামোর ওপর চরম আঘাত হেনেছে।
মানববন্ধন থেকে সরকারের প্রতি ছয় দফা দাবি জানানো হয়:
১. নারী সংস্কার কমিশনের কোরআন-বিরোধী প্রস্তাবগুলো বাতিল করতে হবে।
২. নির্বাচিত শীর্ষ মুফতিদের মাধ্যমে কমিশনের প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করতে হবে।
৩. নারীর জানমাল, সম্ভ্রম রক্ষায় পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. পতিতা, বিধবা, এতিম, অসহায় নারীদের পুনর্বাসনের ও ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ, গুম-খুনের প্রতিকারে শরিয়া ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৬. যৌতুক, ইভটিজিং, যৌন হয়রানির শাস্তি দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
অন্য বক্তাদের বক্তব্য
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী, মুফতি আমিনুল ইসলাম, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মুফতি মাহফুজুর রহমান, মুফতি আনিসুর রহমান, মুফতি তাসফীন মাহমুদ, মুফতি সাইফুল্লাহ, মুফতি জামিল, মুফতি হোসাইন আহমাদ, মুফতি মাহমুদ জাকী ও হাফেজ মাওলানা মুফতি আরমান প্রমুখ।
কেকে/এএম