জয়পুরহাটে কালাই পৌরশহরের পূর্বসড়াইল এলাকায় তেল পরিবহনের সময় চালক ও সহকারীকে ময়লার ভাগারে ফেলে সয়াবিন তেল ভর্তি ট্রাক লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটে। জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের কালাই পৌরশহরের পূর্বসড়াইল এলাকায় চালক ও সহকারীকে হাত-পা বাঁধা অচেতন অবস্থায় ভাগারের স্তুপের নিচে ধান খেতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় জনতা জরুরি সেবায় কল দেয়। পরে কালাই থানার পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে আহত অবস্থায় কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।  

আহত চালক আব্দুল মালেক (৪৫) রংপুর সদরের বাবুগাঁও গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে এবং সহকারী নজরুল ইসলাম একই জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, আহত চালক, সহকারী ও থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার দিনের বেলায় চট্রগ্রাম থেকে সয়াবিন তেল লোড করে রংপুরের উদ্দেশে রওনা হন চালক ও সহকারী। ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক হয়ে আসার পথে রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তারা বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ১৫/২০ জনের একদল ডাকাত আরেকটি ট্রাক নিয়ে পেছন থেকে এসে তাদের পথরোধ করে। এরপর ডাকাতদল তেল ভর্তি ট্রাকে ওঠে চালক ও সহকারীকে মারধর করে।

পরে তাদের ট্রাকে উঠিয়ে হাত-পা বেধে পেছনে ফেলে রাখে। ডাকাত দল দুইটি ট্রাক তাদের দখলে নিয়ে রংপুরের দিকে রওনা দেয়। পথিমধ্যে মোকামতলায় এসে ডাকাতদল রাস্তা পরিবর্তন করে জয়পুরহাটের দিকে রওনা দেয়। এরই মধ্যে তেল ভর্তি ট্রাকের চালক ও সহকারীকে কালাই পৌরশহরের পূর্বসড়াইল এলাকায় পৌরসভার ভাগার স্তুপের নিচে ধান ক্ষেতে হাত-পা বাধা ও মুখে টেপ লাগিয়ে ফেলে যায়।

আজ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সড়াইল মহল্লার কৃষক খলিলুর রহমান ধান খেতে গিয়ে তাদের দেখতে পান। এ সময় তিনি জরুরি সেবায় কল দিয়ে ঘটনাটি জানান। পরে কালাই থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের হাত-পা বাঁধা ও মুখে কসটেপ লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।  

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ্য অবস্থায় চালক আব্দুল মালেক বলেন, ডাকাতরা আমাদের মারধর করে ভাগারের নিচে ফেলে তেল ভর্তি ট্রাক নিয়ে পালিয়ে গেছে। রাত ৩টা থেকে আমরা দুইজনে সেখানে কাঁদার মধ্যে পরে আছি। মুখে টেপ দেওয়া ছিল, তাই চিৎকার করতে পারিনি। অনেককে ধান খেতের আঁইলে যেতে দেখতে পেয়েও কিছু বলতে পারিনি।

কৃষক খলিলুর রহমান বলেন, বিকালে ধান খেতে গিয়ে কাঁদা-পানিতে ওনাদের দুইজনকে পরে থাকতে দেখে ভেবেছিলাম ২টা লাশ পড়ে আছে। পরে তাদের নড়াচড়া দেখে ভয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে তাদের বিষয়ে জানাই। পুলিশ এসে তাদের দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, জরুরি সেবায় থেকে কল পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে হাত-পা বাঁধা ও মুখে কসটেপ লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবারকে তাদের দুইজনের বিষয়ে খবর দেওয়া হয়েছে। সুস্থ্ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেকে/এএম