শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫,
১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: ৫ আগস্ট বিকালে ঘোষণা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র      জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন      গুলিস্তান সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে      গুলিস্তানে মার্কেটে আগুন, নিয়ন্ত্রণে সার্ভিসের ১১ ইউনিট      ৫ আগস্টের মধ্যেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ : তথ্য উপদেষ্টা      যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি      শেখ হাসিনার ফেরার পরিকল্পনা বানচাল      
খোলাকাগজ স্পেশাল
নির্বাচনে কালক্ষেপণ, ঝুঁকিতে পড়বে দেশ
সাজেদ রোমেল
প্রকাশ: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:১৯ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা জানিয়ে আসছে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। সাইফুল হকের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, মাহমুদুর রহমানের নাগরিক ঐক্য, আ স ম রবের জাসদ এবং জোনায়েদ সাকির গণসংহতি এই দাবিতে আগে থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে সমদূরত্ব রক্ষা করে আসা বাসদ ও সিপিবিও সম্প্রতি এ দাবিতে সমর্থন জানিয়েছে। 

অন্তর্বর্তী সরকার ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনে কথা বললেও ধোঁয়াশা কাটছে না। তবে নির্বাচনে কালক্ষেপণে বেশ কিছু ঝুঁকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে দেশ। এমনটা হলে প্রশাসনে অস্থিরতা তৈরি হবে, বিদেশি বিনিয়োগ আসার পথ বন্ধ হবে এবং অরাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতা দখলের সুযোগ পাবে। 

প্রশাসনে চরম অস্থিরতা তৈরি হতে পারে

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনার সাজানো প্রশাসন তছনছ হয়ে যায়। শীর্ষপদে রদবদল, কর্মকর্তাদের অপসারণ, নতুন পদোন্নতি ও বদলির মধ্য দিয়ে নতুন প্রশাসন সাজানো হয়। তবে এ প্রশাসন সেভাবে কাজ করতে পারছে না বলে অভিযোগ প্রথম থেকেই। জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি না পেয়ে সচিবালয় উত্তপ্ত করে তোলেন পদবঞ্চিতরা। আবার তৃণমূলে পুলিশসহ অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীরা আগের মতো জনগণের জান-মাল রক্ষায় তৎপর হচ্ছেন না বলে বার বার অভিযোগ এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাঠের কর্মচারীরা কোনো ঘটনার দায় নিচ্ছেন না। ক্রমেই অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে আমলাতন্ত্রে। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে যদি দেরি হয়, শীর্ষ ও তৃণমূল প্রশাসনে চরম নৈরাজ্য তৈরি হবে। কেউ কারো নির্দেশ শুনবে না, মানবেন না। যে কোনো দুর্যোগে প্রশাসন ঝাঁপিয়ে না পড়লে জনগণ অরক্ষিত হয়ে পড়বে। 

বিদেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা শঙ্কায় 

এমনিতে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থনীতি ভালো অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। রফতানি ও প্রবাসী আয় বাড়ছে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদও ভালো হচ্ছে। কিন্তু দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে। এটা কোনোভাবেই বাড়ছে না। 

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় নেওয়ার আট মাস পর ঢাকায় চারদিনের বিনিয়োগ সম্মেলন হয়ে গেল। সেখানে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বিডার নির্বাহী পরিচালক আশিক চৌধুরীর উপস্থাপনা সবার প্রশংসা কুড়ালেও সরাসরি বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে খুবই কম। এ সম্মেলনে প্রায় সাড়ে চারশ বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশ নেন। তারা দেশের তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেন। বিনিয়োগ পরিবেশেরও খোঁজ নেন। সম্মেলনে ১৫ কোটি ডলার বিনিয়োগে সমঝোতা চুক্তি করেছে চীনা একটি প্রতিষ্ঠান। আর এ সম্মেলনেই স্টার্টআপ কোম্পানি শপআপের ১১ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার কথা জানানো হয়। 

আয়োজকেরা জানান, গত চার দিনের সম্মেলনে তিনটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়ানো ও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তারা কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে, সে রকম কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে এসব প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে এ দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্পেনের খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিটেক্স, সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম ও চীনের তৈরি পোশাক কোম্পানি হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ। এর মধ্যে হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে সমঝোতা চুক্তি করেছে। 

এত হইচই করে বিনিয়োগ সম্মেলন করে আশাব্যঞ্চক সাড়া না পাওয়ার পেছনে নির্বাচিত সরকারের অনুপস্থিতিকে দায়ী করছেন অনেকেই। জাতীয় নির্বাচন করতে সময়ক্ষেপণ করলে বিদেশি বিনিয়োগের আসার সব সম্ভাবনাই শেষ হয়ে যাবে। 

অরাজনৈতিক শক্তি উত্থানের রাস্তা খুলবে

 অনেকে ভয় পাচ্ছেন জাতীয় নির্বাচনে যত দেরি হবে, ততই অরাজনৈতি শক্তির উত্থানের শঙ্কা বাড়বে। এরই মধ্যে ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি ও নীরব রেশারেশিতে ক্রমেই রাজনৈতিক অঙ্গনে কালোমেঘ দেখা যাচ্ছে। বিএনপির বিরুদ্ধে যেমন দখল-দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ প্রতিদিন ছাপা হচ্ছে পত্রিকায়। তেমনি প্রশাসনে শীর্ষ পদ ও আমলাতন্ত্রে দখলের লড়াইয়ে নেমেছে জামায়াতে ইসলামি। স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একেক সময় একেক বক্তব্য দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী বলে অভিযুক্ত দলটি জল ঘোলা করে ফেলেছে। 

এ অবস্থায় সারা দেশে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের মিছিল হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। সেসব মিছিলে ক্রমেই লোক বাড়ছে, পুলিশ গ্রেফতার করে থামাতে পারছে না মিছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে বিপুলসংখ্যক মানুষ পোস্ট দিচ্ছে। খুব দ্রুত দলটি মাঠে চলে আসলে আসলে ৫ আগস্টের পর থেকে অনেক ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার সংখ্যা বাড়বে। তাতে সারা দেশে বিশাল নৈরাজ্য তৈরি হবে, কোনো সরকারের তা থামানোর শক্তি হয়তো থাকবে না। এ অবস্থায় অরাজনৈতিক শক্তি দেশের ক্ষমতা নেবে নাকি আওয়ামী লীগ আবার রাজনীতি ফিরবে, এমন প্রশ্ন এখন সর্বত্র। নির্বাচন করতে দেরি করলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যেমন জনগণ বিরক্ত হয়ে পড়বে, তেমনি তাদের জনসমর্থনও অনেকটাই কমে যাবে। 

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  নির্বাচন   কালক্ষেপণ   প্রশাসন   রাজনৈতিক দল  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ডিএনএ’র মাধ্যমে সনাক্ত হবে মরদেহ, পরিবার চাইলে নিতে পারবেন গ্রামে
যুক্তরাষ্ট্র না রাশিয়া, সাগরের তলদেশের শক্তিতে কে এগিয়ে?
আশুলিয়ায় আওয়ামী লীগের ৩ নেতাকর্মী গ্রেফতার
চাটমোহরে ভাঙা রাস্তা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়েসহ নিহত ৪

সর্বাধিক পঠিত

‘শুধু নির্বাচনের জন্য জুলাই অভ্যুত্থান হয়নি’
‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
একমণ চালের দামেও মিলছে না এক কেজি ইলিশ
শেখ হাসিনার ফেরার পরিকল্পনা বানচাল
সালথায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন গ্রেফতার

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close