নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের আপিল নিষ্পত্তির জন্য সরকারকে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন আইনজীবীরা। তাদের দাবি, এ সময়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করে রায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আরো বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ আদালতের জৈষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ নিহত সাতজনের বিচারের রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন থেকে এমন দাবি জানান সর্বস্তরের আইনজীবীরা। মানববন্ধনে নিহতদের স্বজন ও এলাকাবাসীরাও অংশ নেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, আইনজীবী নেতা অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জাকির হোসেন, অ্যাড. আওলাদ হোসেন, বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খাঁন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. আবু আল ইউসুফ খাঁন টিপু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, অ্যাড. মশিউর রহমান শাহীন, অ্যাড. খোরশেদ আলম মোল্লা প্রমুখ।
মানববন্ধনে অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। যখন এ ঘটনাটি ঘটে তখন নারায়ণগঞ্জে গডফাদারের রাজত্ব কায়েম ছিল। নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমান ও তার দোসর নূর হোসেন বাংলাদেশের একটি প্রশিক্ষিত বাহিনীকে টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে প্রকাশ্য দিবালোকে চন্দন কুমার সরকার, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে হাজার হাজার মানুষের সামনে থেকে অপহরণ করে। তিন দিন পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে আসে। তাদের প্রত্যেকের বুকের মধ্যে চব্বিশটি করে ইটবাঁধা ছিল। এই বীভৎসতা দেখে শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় পুরো বিশ্বের মানুষ কেঁদে ছিল।
তিনি আরো বলেন, নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে মামলার রায় দেওয়া হয়। সেখানে ৩৫ আসামিদের ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে তারেক সাইদ আওয়ামী লীগের নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার মেয়ের জামাতা এবং অন্য আসামিরাও আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট ছিলেন। তারা উচ্চ আদালতে মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করে।
আপিল করার পরেও আজ সাত বছর কেটে গেছে। মামলাটি নিষ্পত্তি হচ্ছে না। বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ অবিলম্বে দ্রুততার ভিত্তিতে আপিল বিভাগে মামলাটি নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবেন। ১৫ দিনের মধ্যে শুনানির ব্যবস্থা করে রায় কার্যকরের দাবি জানাই।
নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা সবাই চাই। কিন্তু কেন সুপ্রিম কোর্টে এটি ঝুলে আছে? কেন বিচার হচ্ছে না ? আমরা এজন্য নিরাশ হয়ে আছি! মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, এটর্নি জেনারেল ও প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি যাতে উনারা এ বিচারে রায়টি যাতে দ্রুত কার্যকর করেন।
কেকে/এএস