ব্রিজের অভাবে দুর্ভোগ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
🕐 ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৮, ২০১৮
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গবরা নদীতে ব্রিজ না থাকায় নয়টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারকে যাতায়াতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে নয় গ্রামবাসী ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানালেও কোনো সুফল পাননি।
তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের উত্তর-পূর্বে কৃষ্ণকান্ত-কালারামজোতনামক স্থান থেকে সরু নালা-খালে প্রবাহিত জলরাশি গবরা নদী নামে পরিচিতি। এ নদীটি চৌরাস্তা বাজারের গাঁ ঘেঁষে তেঁতুলিয়া-পঞ্চগড় মহাসড়ক অতিক্রম করে ভারতে বেরং নদীর সংগে মিলিত হয়েছে। কিন্তু এ নদীর দুই পাড়ে প্রায় নয়টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদীর পশ্চিম-উত্তরে দর্জিপাড়া গ্রাম, দক্ষিণ দর্জিপাড়া গ্রাম, কানকাটা গ্রাম, শারিয়ালজোত গ্রামে ও চিমনজোত গ্রাম এবং পূর্বে ভারত। নদীর উত্তর-পশ্চিমে কলেজপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া ও আজিজনগর গ্রামসহ মোট নয়টি গ্রাম আছে। এসব গ্রামের সাধারণ মানুষ গৃহস্থালি ও ছোট-খাটে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। নয়টি গ্রামের জনসাধারণ তাদের নিত্যদিনের কাজকর্ম সম্পাদনে তেঁতুলিয়া সদরের চৌরাস্তা বাজার এবং আজিজনগর রোডে নদীর হাঁটু পানি পেরিয়ে যাতায়াত করেন। এছাড়া গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, তেঁতুলিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, তেঁতুলিয়া ডিগ্রি কলেজ, কালান্দিগঞ্জ সিনিয়র মাদ্রাসা, আজিনগর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আজিজ নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হিউম্যান কেয়ার স্কুল ও সারিয়ালজোত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতে গ্রামের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী চরম ভোগান্তির শিকার হন। বর্ষা মৌসুমে বই-খাতা নিয়ে পরনের প্যান্ট-গেঞ্জি, কাপড়-চোপড় পরিহিত অবস্থায় নদী পারাপারে অনেকের বই-খাতা ভিজে ও ভেসে যায়। ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম হওয়ায় সারিয়ালজোত বিজিবি ক্যাম্প এবং মাঝিপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যদের দিন-রাত সীমান্ত টহলে চরম অসুবিধা হয়। কয়েক বছর আগে নদীটি পারাপারের সময় দর্জিপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কয়েকজন শিশু নদীতে ডুবে সলিল সমাধি হয়েছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে নদীটি ভরাট হওয়ায় গৃহস্থালি কাজকর্ম সম্পদানে মালামাল ও মৌসুমের উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া করতে পারে না। এদিকে, নয় গ্রামবাসী ব্রিজটি নির্মাণের দাবিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদে একাধিক আবেদন করেছে। কিন্তু সেই আবেদনের কোনো সুফল আদৌ পাইনি।
দীর্ঘ দিনেও একটি ব্রিজের স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় ২০১৩ সালের শেষ দিকে উত্তর দর্জিপাড়া সমাজ উন্নয়ন ক্লাব সিমেন্টের আরসিসি পিলার, লোহার এঙ্গেল ও কাঠ-বাঁশ দিয়ে অস্থায়ীভাবে একটি ব্রিজ নির্মাণ করেন। বিগত দুবর্ষা মৌসুমে পানির স্রোতে অস্থায়ী ব্রিজটিও ভেঙে গেছে। ফলে খরা কিংবা বর্ষা উভয় মৌসুমে নদীর পানি পেরিয়ে এলাকাবাসীকে যাতায়াত করতে হয়।