গত বছরের জানুয়ারিতে রংপুর মেরিন একাডেমির শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হয়। তবে উদ্বোধন বিলম্বিত হওয়ায় ভর্তি হওয়া ক্যাডেটরা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে রয়েছেন। আগামী জুলাইয়ে তাদের রংপুরে শিফট করা হবে। গতকাল নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও জলযানের উদ্বোধন করা হয়। অন্যদিকে নৌ-মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রংপুর মেরিন একাডেমি সরকারের রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী মানবসম্পদ উন্নয়ন, বেকার সমস্যার সমাধান, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। নবসৃষ্ট অবকাঠামো ও জলযান নদীর নাব্য রক্ষা, নৌ-পথের উন্নয়ন, উপকূলীয় এলাকার যাত্রী পরিবহন ও দক্ষ নৌকর্মী গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। নবসৃষ্ট অবকাঠামো এবং জলযান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নৌ-বিভাগের উন্নয়নে নতুন মাত্রা সংযোজন করবে। মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে তৈরি ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজারসহ শতাধিক নৌ-যান একসঙ্গে উদ্বোধন বাংলাদেশের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

রংপুর মেরিন একডেমি সম্পর্কে একাডেমির কমান্ড্যান্ট ক্যাপ্টেন মো. শফিকুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে মেরিন একাডেমির শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয়েছে। ভর্তি হওয়া ক্যাডেটরা আপাতত চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে সংযুক্ত আছে। আগামী জুলাই মাসে তাদের রংপুরে শিফট করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি কারিকুলাম মোতাবেক চার বছর মেয়াদের কোর্সের প্রথম পর্যায়ে প্রতি বছর ৫০ জন করে ক্যাডেট ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।

ভিডিও কনফারেন্সে রংপুর প্রান্তে অংশ নেন রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, মেরিন একডেমির কমান্ড্যান্ট ক্যাপ্টেন মো. শফিকুল ইসলাম সরকার, পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু ছালেহ মো. তাজিমুল ইসলাম শামীম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডল, পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায়, রংপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আল মামুন রনি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম।

পীরগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর রায়পুর ইউনিয়নের ফলির বিল এলাকায় ২০১২ সালের জুলাই মাসে রংপুর মেরিন একাডেমির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের কাজ ২০১৫ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেট শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে দুবার সয়মসীমা বাড়িয়ে ২০২০ সালে জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। এতে নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছিল একশ কোটি টাকা। প্রকল্পটি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়িত হয়েছে।

১০ একর জমির ওপর নির্মিত রংপুর মেরিন একাডেমিতে শিক্ষা ভবন ছাড়াও প্রশাসনিক ভবন, প্যারেড গ্রাউন্ড, ডরমেটরি ভবন, সাতটি আবাসিক ভবন, মসজিদ, অত্যাধুনিক জিমনেশিয়াম, সুইমিং পুলসহ ৩৫টি অবকাঠামো রয়েছে। অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ ভবনের পাশাপাশি রয়েছে দৃষ্টিনন্দন পুকুর। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রয়েছে বিশাল সোলার প্যানেল।