ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

টিকা নিতে আগ্রহ খালেদা জিয়ার!

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০৪, ২০২১

টিকা নিতে আগ্রহ খালেদা জিয়ার!

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসের টিকা নিতে ইতিবাচক। তবে কবে নাগাদ তিনি ভ্যাকসিন নেবেন তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গতকাল বুধবার বিএনপির চেয়ারপারসনের চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

এই চিকিৎসক জানান, উনার আশপাশে যারা থাকেন সবাই টিকা নিয়েছেন। উনি না চাইলে তো কেউ টিকা নিতে পারতেন না। আর উনার আশে-পাশের পরিস্থিতি দেখে বুঝা যায় যে, উনি টিকা নিতে ইতিবাচক। তবে কবে নাগাদ উনি ভ্যাকসিন নেবেন তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ৫ বছরের সাজায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট সম্পর্কিত দুইটি দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে কারাভোগ করেন দুই বছর। গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার ৬ মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লক থেকে মুক্তি দেন। পরে দ্বিতীয় দফায়ও সরকার সাজার স্থগিতাদেশ আরো ৬ মাস বৃদ্ধি করে। এই মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৫ মার্চ। মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাড়ি ফিরোজায় ওঠেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর থেকে সেখানেই আছেন তিনি। ওই দিন থেকেই ফিরোজার দোতলায় এক রুমে খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টাইনে আছেন। বেগম জিয়ার চিকিৎসার সব কিছু লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধায়ন করছেন। আর তার সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন আছেন।

স্বজনদের সঙ্গেই সময় কাটে খালেদা জিয়ার
গত বছরের ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে ফিরোজাতেই আছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু তাকে বাড়ির ছাদ বা আঙিনায় কখনো দেখা যায়নি। দুই নিরাপত্তাকর্মী বলেন, মাঝেমধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই, বোন, কিংবা ভাইয়ের স্ত্রী আসেন দেখা করতে। এ ছাড়া আসেন চিকিৎসকেরা। দলীয় কোনো নেতাকর্মীর দেখা যায় না এখানে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় চার-পাঁচজনের একটি মেডিকেল টিম রয়েছে। তার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়মিতভাবে তত্ত্বাবধান করেন যে কজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক, তাদের একজন অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এক বছরে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কারও সাহায্য ছাড়া চলাফেরা বা নিজের কোনো কাজই করতে পারেন না। চিকিৎসকেরা বলছেন, ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চোখের প্রদাহ, হৃদরোগ সমস্যাসহ নানা রকম শারীরিক জটিলতা রয়েছে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারা দেখা করতে যেতে পারেন না। কেবল দুই ঈদের সময় দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয় তাদের।

দ্বিতীয় দফা মুক্তির সময়সীমা ২৪ মার্চ
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত কারাগারে পাঠান। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী থাকার পর করোনা পরিস্থিতিতে শর্ত সাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালে। পরে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়, যার সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা আগামী ২৪ মার্চ। তার আগেই পরিবারের পক্ষ থেকে আবার আবেদন করা হবে বলে বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য দরখাস্ত করা হলে সে ক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য স্থায়ী মুক্তির যে দাবি দলের পক্ষ থেকে তোলা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তার (খালেদা জিয়ার) সাজা স্থগিত রাখা হয়েছে। তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কোনো আবেদন করা হয়নি। তার সাজা স্থগিত করার জন্য এর আগে তারা যেভাবে আবেদন করেছিলেন, তা বিবেচনা করেছে সরকার। সেভাবে আবার দরখাস্ত করা হলে বিবেচনা করা হবে।

 
Electronic Paper