ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আদিতমারী উপজেলা চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত

আদিতমারী (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
🕐 ৯:১৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২০

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক ইমরুল কায়েসকে বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। সোমবার (৩০ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনের সাথে অসদাচরন, দুর্ব্যবহার, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকী প্রদান করেছেন। সেহেতু তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর থেকে পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরে আর্থিক বিষয়ে অর্থনৈতিক দাবী প্রতিষ্ঠিত চেষ্টা করে আসছেন। সেহেতু আদিতমারী উপজেলা চেয়ারম্যান কর্তৃক সম্পাদিত এহেন কর্মকাণ্ড উপজেলা পরিষদে কর্মরত কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে যাতে সঠিকভাবে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম বাস্তবায়নে অচলাবস্থা সৃষ্টি ও জনস্বার্থ মারাত্বক বিঘ্নিত হতে পারে। তার পদে বহাল থেকে উপজেলার কার্যক্রম পরিচালনা রাষ্ট্র বা পরিষদের স্বার্থ পরিপন্হি এব তার বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮[উপজেলা পরিষদ (সংশোধিত) আইন ২০১১ দ্বারা সংশোধিত এর ১৩ ধারা অনুসারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সেহেতু সরকার জনস্বার্থে তাকে তার স্বীয় পদ হতে সাময়িক উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৮৮ উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন ২০১১ দ্বারা সংশোধিত ১৩(ঘ)(১) ধারা অনুসারে লালমনিহাট আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হল এব তার স্থলে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-০১ কে উপজেলা পরিষদের কার্য্যক্রম পরিচালনার করার জন্য পরিষদের আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হল।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। যা বিধি সম্মত না হওয়ায় ইউএনও নাকোচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান চেয়ারম্যান। এরপর চেয়ারম্যান ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা লোক দিয়ে খুলতে গেলে তার ছবি তোলেন ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন।

একই সঙ্গে ক্যামেরা খুলে ফেলার কারণ জানতে চাইলে ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করা হয় ‘(বেশি কথা বললে পিটিয়ে নরসিংদী পাঠিয়ে দেবো। উপজেলা পরিষদ কি তোর বাবার সম্পত্তি, উপজেলা পরিষদ কি তুই চালাবি?)’। এভাবে গালমন্দ করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই দিন রাতে ইউএনওসহ ১৮ জন অফিসার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ১৬ নভেম্বর ৩৭ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে পাঠায় জেলা প্রশাসন।

এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে গত মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) সরেজমিন তদন্ত করেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওহাব ভূঞা। এ সময় জেলা প্রশাসক আবু জাফর ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম তার সাথে ছিলেন।

নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে গত রোববার (১৫ নভেম্বর) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় জিডি (নং৫৫৮) করেন ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। একই দিন যৌথ স্বাক্ষরীত উপজেলার রাজস্ব তহবিলের ব্যাংক হিসাবের ১৯টি চেকের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস। যা নিয়েও আদিতমারী থানায় জিডি(নং ৫৫৯) করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্টানোটাইপিষ্ট হাবিবুর রহমান।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের সদ্য সাময়িক বরখাস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার মোবাইলে চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিব করেননি।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এ ধরনের একটি চিঠি স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে পেয়েছি।

 
Electronic Paper