ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

শামসুজ্জোহা পলাশ, চুয়াডাঙ্গা
🕐 ৪:৩৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ কিছুতেই নামছে না, চড়চড় করে বে‌ড়েই চ‌লে‌ছে। চলতি মৌসুমের প্রায় প্রতিদিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। জেলাটিতে গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে খুব অতিতীব্র দাবদাহ।

 

রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় চলতি মৌসুমের দেশের ও এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা ৩টায় চলতি মৌসুমে দেশের ও এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে সকালে তাপমাত্রা ‌রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস। এসময় বাতা‌সের আদ্রতা ছিল ৫৬ শতাংশ এবং দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশ‌মিক ৫ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস। এসময় বাতা‌সের আদ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ।

এর আগে জেলায় চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৯ এপ্রিল দুপুর ৩টায় ওই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, আজ‌কের তাপমাত্রা সকল রেকর্ড ভে‌ঙ্গে‌ছে। এর আগে ২০০৫ সালের ২ জুন চুয়াডাঙ্গায় স‌র্বোচ্চ তাপমাত্র উঠেছিল ৪৩ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস এবং ২০১৪ সালের ২১ মে এ জেলায় ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। এর আগে, ১৯৯৫ সালের পহেলা মে দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে হিসাবে ২৯ বছর পর আজ মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা তাপমাত্রার পারদ ৪৩ দশামক ৭ ডিগ্রিতে উঠলো।

একটানা এমন তাপমাত্রার ফলে খরতাপে জেলায় খুব অতিতীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে জনজীবন ওষ্ঠাগত। ভুগছে প্রাণীকূলও। প্র‌তি‌দিনই মারা যা‌চ্ছে ফা‌র্মের মুর‌গি, পোষা কবুতর। ইতোম‌ধ্যে দাবদা‌হে জেলার দামুড়হুদা উপ‌জেলায় এক নারীসহ ৩ জন মারা ‌গে‌ছে।

এখা‌নে দিন-রাতের তাপমাত্রার পার্থক্যও থাকছে কম। দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদ আর সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরম নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। এর সা‌থে বিদ্যু‌তের লু‌কোচু‌রি‌তে (লোড শে‌ডিং) চুয়াডাঙ্গার জনজীবনে নে‌মে এসেছে চরম অস্ব‌স্থি।

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেলা ১২টা থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। অতি প্র‌য়োজ‌নে কেউ বের হলে ছাতা মাথায় বের হ‌চ্ছেন। দেখা গেছে, এই তাপপ্রবাহে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর এবং ভ্যান ও রিকশা শ্রমিকেরা। গরমে ঘেমে-নেয়ে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন।

এদিকে তীব্র তাপদাহে মাঠের ফল-ফসলও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে। কোথাও কোথাও ফসল ঝলসে যাওয়ার খবর মিলেছে।

চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ‌রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস। এসময় বাতা‌সের আদ্রতা ছিল ৫৬ শতাংশ। দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশ‌মিক ৫ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস। এসময় বাতা‌সের আদ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ। এবং বেলা ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে দেশের স‌র্বোচ্চ তাপমাত্রা। বাতা‌সে জলীয় বা‌ষ্পের প‌রিমাণ অনেক বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হ‌চ্ছে।

শুক্রবার (২৬ এ‌প্রিল) বেলা ৩টায় দে‌শের সর্বোচ্চ তাপমাত্র ৪২ দশ‌মিক ৭ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস এবং শ‌নিবার (২৭ এ‌প্রিল) সন্ধা ৬টায় দে‌শের স‌র্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশ‌মিক ৭ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস, র‌বিবার (২৮ এপ্রিল) তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশ‌মিক ৮ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস, সোমবার (২৯ এ‌প্রিল) দে‌শের স‌র্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেল‌সিয়ান চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়।

তি‌নি আরো জানান, জেলায় হিট এলার্ট জারি আছে। জনস‌চেতনায় জেলা প্রশাস‌কের পক্ষ থে‌কে প্র‌তি‌দিনই জেলা জু‌ড়ে মাই‌কিং করা হ‌চ্ছে। আজ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রার পারদ সর্বোচ্চ ৪০ থে‌কে ৪৩ ডিগ্রী‌তে উঠা নামা কর‌ছে। সকলকে সাবধানে থাকার অনুরোধ রইলো।

 
Electronic Paper