ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হৃদয় রাঙানো বসন্ত

মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর
🕐 ৩:২৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০

ভোরবেলা ঘুম থেকে আড়মোড়া ভেঙে যখন দেখি কুয়াশার চাদর সরিয়ে সূর্যের হাসি, তখন মনে পড়ে যায় বসন্ত এসে গেছে। মধ্য দুপুরে বৃক্ষতলে যখন শুকনো পাতা কুড়োনোর তাড়া নেই, তখন মনে হয় বসন্ত এসে গেছে। পড়ন্ত বিকেলে উদাস মনে যখন শুনি কোকিলের সুর, মনে পড়ে যায় বসন্ত এসে গেছে।

হ্যাঁ, বসন্ত এসে গেছে। ঘাসের পাতায় শিশির নিয়েছে ছুটি, কৃষ্ণচূড়া-পলাশের লাল আবীরে রক্তিম হচ্ছে পিচঢালা রাজপথ, আম্রকাননগুলো মুকুলের গন্ধে ‘ম ম’ করছে, পিঠাপুলির আসরেও মুখোর আমেজটা কমে গেছে। সত্যিই বসন্ত এসে গেছে।

ঋতু পরিক্রমায় আরও একবার শীত বিদায় নিল। ফাগুনের আগমনে স্মৃতির জোনাকিরা জেগে উঠেছে আবারো। লেপ মুড়ি দিয়ে অলস সময় কাটানো কবিরাও হয়তো নীরবতা ভেঙে অজস্র কবিতার পসরা সাজাচ্ছে। মাঠে মাঠে কৃষকদের নতুন ধান লাগানোর ব্যস্ততা বেড়ে গেছে।

ক্যাম্পাস জীবনের ফাগুনগুলো আরো বেশি বসন্তময়। হলুদে হলুদে ছেয়ে যায় ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রান্তর। বৈশাখের মতো পহেলা ফাগুনে আনুষ্ঠানিক কোনো ছুটি থাকেনা। তাতে অবশ্য ঋতুরাজকে সাদরে গ্রহণ করতে আয়োজন বা উদযাপনে ন্যূনতম ভাটা পড়েনা। তারুণ্য মানেই যে বাধনহারা পাখির মতো চঞ্চলতা, তারুণ্য মানে কবিগুরুর ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা।’হলুদভূষণে বসন্তবরণ থেকে শুরু করে ফাগুনের প্রতিটি সূর্যদোয়ই চির অম্লান বন্ধুত্বের ধারক।

গহীন অরণ্যের পত্রপল্লবীর নবযৌবন ফিরে পাওয়া, গোধূলীতে জলের বুকে সূর্যের অপূর্ব মিশে যাওয়া, উদাস পথিকের হারানো সুর খুঁজে বেড়ানো- বসন্তের একেকটি সৌন্দর্য যেন বৈচিত্র্যময় তারুণ্যের প্রতীক। বাসন্তী সাজে তরণীর খোঁপায় গোঁজা রঙ-বেরঙের ফুল দেখে শিল্পী গেয়ে উঠেন, ‘রঙিন এ বিহুর নেশা কোন আকাশে নিয়ে যায়।’

পরিবর্তনের চিরন্তন নিয়ম মেনে একসময় বসন্তও বিদায় নেবে আমাদের মাঝ থেকে। আসবে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত। কিন্তু ভালোবাসার প্রতিটি স্পন্দন নিয়ে বসন্ত মিশে থাকে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায়। বসন্তের এ অবগাহন ছড়িয়ে যাক নীলাম্বর ছাড়িয়ে অসীম বিশালতায়, দিগ্বিদিক।

 
Electronic Paper