মেঘ পাহাড়ের মিতালি
মুহাম্মদ সাইফুর রহমান
🕐 ১:৪১ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৩, ২০১৯
পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের রুপালি জলরাশি, আগে ঘন সবুজ উপত্যকা, দক্ষিণে ইকোপার্ক, ওপরে প্রাচীন মন্দির, পাহাড়ের গা ঘেঁষে ঝর্ণা, আর চারদিকে শুধু সবুজ পাহাড়ের সমারোহ। অসংখ্য ছোট ছোট টিলা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সারা বছরই এখানে মেঘেরা খেলা করে। পাহাড় আর সমতলের মিশ্রণের এ জনপদটি শুধু বড় তীর্থস্থানই নয় ভ্রমণপিয়াসীদের প্রিয়স্থানও বটে। সবমিলিয়ে পাহাড়টি যেন এক নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ। বলছিলাম মেঘ-পাহাড়ের মিতালি চন্দ্রনাথ পাহাড়ের কথা।
আঁকাবাঁকা, উঁচু-নিচু, এবড়ো-থেবড়ো প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের পাহাড়ি পথ পাড়ি দেওয়ার পর চূড়ায় উঠে যখন চন্দ্রনাথ পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় পা রাখি তখন যেন রাজ্যের সব ভালোলাগা ভর করে। পাহাড়ের ওপর থেকে আবছা আবছা দেখতে পাওয়া সুবিশাল সমুদ্র যেন হারিয়ে যাওয়ার ডাক দিচ্ছে। দৃশ্যটা ভারী চমৎকার।
আমাদের দলের প্রত্যেকেরই একই মত, চন্দ্রনাথ পাহাড়ের নাম শুনলেই সবার মনে এ স্মৃতিটি সবার আগে উঁকি দেবে। সকাল ৭টার সময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে দুটি হায়েসে করে রওনা দিই আমরা। আর সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকু- শহরে গিয়ে পৌঁছাই। তারপর আর কিছুক্ষণ পথ পাড়ি দিয়ে সোজা চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে। চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের শিক্ষার্থীদের এক পরিবেশনায় নিস্তব্ধ হয়ে যায় পুরো সীতাকুণ্ডের রাস্তা এবং গানের তালে তালে গাড়িতেই সবাই নাচ আর কোরাসে মেতে ওঠে। পাহাড়ে ওঠার পথে শুধু একটি ঝর্ণা দেখতে পাওয়া যায়। এখান থেকে পাহাড়ে ওঠার পথ দুই ভাগে বিভক্ত।
প্রায় দেড় ঘণ্টা হাঁটার পর চোখে পড়ল একটি মন্দির। নতুন কেউ হলে ভেবে নিতে পারেন এটিই বোধহয় চন্দ্রনাথ মন্দির এবং সর্বোচ্চ চূড়া। কিন্তু না আরও আধা ঘণ্টা খানেক হাঁটতে হবে চূড়ায় উঠতে হলে। আর এরপরেই দেখা মিলবে চন্দ্রনাথ মন্দিরের। আমরা যথারীতি আরও ২০ মিনিট হাঁটার পর চন্দ্রনাথ মন্দিরের দেখা পেলাম। প্রায় ১১শ ফুট ওপরে এত দূর পথ পাড়ি দিয়ে সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠলেই যেন প্রশান্তি। চূড়ায় ওঠার পর পাহাড়ের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সব কষ্ট ভুলিয়ে দেয়। হিমশীতল বাতাসে সব ক্লান্তি ও অবসাদ ধুয়ে-মুছে নিমিষেই একাকার হয়ে যায়...