ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাবির উপাচার্যকাণ্ড: সুষ্ঠু সমাধান হোক

সম্পাদকীয়
🕐 ১:১৮ অপরাহ্ণ, মে ০৯, ২০২১

রাবির উপাচার্যকাণ্ড: সুষ্ঠু সমাধান হোক

প্রয়াত লেখক আহমদ ছফা ‘গাভী বিত্তান্ত’ উপন্যাসে একটি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্যের যে চরিত্র অঙ্কন করেছেন, এরপর বিভিন্ন সময়ে কয়েকজন উপাচার্য বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উপন্যাসটিকে ‘বস্তুনিষ্ঠতা’ দিয়েছেন। একজন লেখকের বোধ ও উপলব্ধি যে সুদূরপ্রসারী ও যথার্থ সেটাই প্রমাণিত হয়েছে বারবার! সম্প্রতি নতুন করে আলোচনায় এসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাবির বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষদিন গত বৃহস্পতিবার ১৪১ জনকে এডহকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ তদন্ত রোববার (আজ) থেকে শুরু হবে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনায় আসছে বিতর্কিত আরও এক নিয়োগের ঘটনা। ২০০৪ সালে তৎকালীন উপাচার্য ফাইসুল ইসলাম ফারুকী ৫৪৪ জনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেই নিয়োগ নিয়েও তখন চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের রাবি উপাচার্য হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে গত বৃহস্পতিবার ১৪১ জনকে এডহকে নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন। নিয়োগপ্রাপ্ত অধিকাংশই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এ নিয়োগ নিয়ে ওইদিন ক্যাম্পাসে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিষদ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মামুনুর রশীদ জানান, ৯ জন শিক্ষক, উচ্চমান ও নিম্নমান সহকারী পদে ৮৫ জন, অফিসার পদে ২৩ জন এবং সহায়ক কর্মচারী পদে ২৪ জন নিয়োগ পেয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের দেওয়া ১৪১ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর এডহক নিয়োগ বাতিল না হলেও তারা স্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রায় সাড়ে তিনশ’ জনবল নিয়োগ দেওয়া আছে এডহক ভিত্তিতে। এখনো তাদের স্থায়ী করা হয়নি। তবে নিয়োগ স্থায়ী করা না হলেও তা বাতিলের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সদ্যবিদায়ী উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সালের অ্যাক্ট অনুযায়ী এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ গত বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী এডহক ভিত্তিতে ৯ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৪১ জনকে নিয়োগ দেন। পরদিন তার মেয়াদের শেষ দিন বৃহস্পতিবার যোগদান করেন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজ আল বলেন, ‘ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময়ে অনেকের দ্বারা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু কেউ তাদের ত্যাগের মূল্যায়ন করেনি। উপাচার্য স্যার আমাদের সে মূল্যায়ন করেছেন। আমরা যারা নিয়োগ পেয়েছি তাদের মধ্যে অনেকেরই ছাত্রশিবিরের হামলায় অঙ্গহানি হয়েছে। বাইরে কিছু করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। সেই জায়গায় উপাচার্য আমাদের চাকরি দিয়ে পিতার ভূমিকা পালন করেছেন।’ অন্যদিকে দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত ছাত্রলীগ নেতাদের অধিকাংশকে তৃতীয় শ্রেণির পদে চাকরি দিয়ে তাদের অপমান করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্রলীগের একাংশ। উদ্ভূত পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধান কাম্য। পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্যরা নিজেদের নাম ও পদের সম্মান অক্ষুণœ রাখবেন এমনটাও প্রত্যাশিত।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper