ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দখলমুক্ত হোক বনভূমি

সম্পাদকীয়
🕐 ১:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৭, ২০২১

দখলমুক্ত হোক বনভূমি

বনখেকোদের আগ্রাসন নতুন নয়। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে এদের অপতৎপরতা। নানা উপায় সংশ্লিষ্টদের ‘ম্যানেজ’ করে এরা গড়ে তুলছে দখলদারির রাজ্য। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এক কিংবা দুই একর নয়। ১০ ব্যক্তির দখলে ১ হাজার ১৫৫ একর বনভূমি। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দোখলা রেঞ্জে এমন জবরদখলের চিত্রে প্রশ্নবিদ্ধ জেলা প্রশাসনের ভূমিকা। সেখানে উচ্ছেদ মোকদ্দমার ফাইল চাপা পড়ে থাকার অভিযোগ রয়েছে। যদিও বসে নেই বন অধিদফতর। বন উদ্ধারে তারা নিয়েছেন নানা পরিকল্পনা। বন উদ্ধারে নড়েচড়ে বসেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। বন অধিদফতরের তথ্য মতে, দেশে মোট বনভূমির ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫২ একর জমি জবরদখল হয়েছে।

সংরক্ষিত, অর্জিত বা অর্পিত, অশ্রেণিভুক্তসহ দেশে মোট বনভূমির পরিমাণ ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ একর। অধিদফতর সূত্র মতে, সিএস রেকর্ডভুক্ত বনভূমি পরবর্তীতে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্ত হওয়ায় ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এর পাশাপাশি বনভূমির মধ্য দিয়ে সড়ক ও নতুন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের ফলে বনভূমি জবরদখল প্রবণতা বেড়েছে। এ ছাড়া দেশের বিস্তীর্ণ বনভূমি কৃষিজমি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার জানান, বেহাত বন উদ্ধারে উচ্ছেদ মোকদ্দমা দায়ের হলেও নিষ্পত্তি হচ্ছে না। অথচ বন বিভাগের একার পক্ষে উচ্ছেদ মোকদ্দমাগুলোর নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।

দোখলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ জানান, রেঞ্জটির ফুলবাগচালা ইউনিয়নের ফুলবাগচালা মৌজার চাঁদপুর বিটের জামগাছা গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে আইজ উদ্দিন। তিনি একাই ৩০০ একর বনভূমি জবরদখল করে রেখেছেন। একই ইউনিয়নের পীরগাছা মৌজার দোখলা সদর বিটের থানার বাইদ গ্রামের মৃত আজিন্দ্র মংয়ের ছেলে রাগেন্দ্র নকরেকের দখলে রয়েছে ২৫০ একর। একই ইউনিয়নের ফুলবাগচালা মৌজার চাঁদপুর বিটের বাঘাডোবা এলাকার মৃত নায়েব আলীর পুত্র নস্কর মেম্বারের দখলে রয়েছে ২০০ একর বনভূমি। দোখলা রেঞ্জে মাত্র ১০ ব্যক্তির দখলে ১ হাজার ১৫৫ একর বনভূমি। জবরদখলকৃত বনভূমির বিশাল একটি অংশ কৃষিজমি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বেহাত বনভূমি উদ্ধারে উচ্ছেদ মোকদ্দমা দায়ের করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের মন্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধান বলছে, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর দোখলা রেঞ্জের টেগামারি এলাকায় বনে অবৈধভাবে সৃজিত সহিদের কলাবাগান উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী বন সংরক্ষক জামাল হোসেন তালুকদার। এ সময় দোখলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ, সিএফডব্লিউ ও বিভিন্ন বিটের স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানের পর সহিদের কলাবাগানটি বাসন্তী রেমার কলাবাগান বলে অপপ্রচার শুরু করে একটি চক্র। পরবর্তীকালে বিভ্রান্ত হয়ে গারো সম্প্রদায়ের লোকজনসহ স্থানীয়রা দোখলা রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে। প্রাণ বাঁচাতে পাশর্^বর্তী ডাকবাংলোয় আশ্রয় নেন বন বিভাগের দুই কর্মকর্তা। বনকে ঘিরে এমন অপতৎপরতা বন্ধ জরুরি। যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে দুর্বিনীত হয়ে উঠছে দুর্বৃত্তরা তাদেরও চিহ্নিত করা জরুরি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper