ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিবপুরে পুলিশ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষ: আহত ৪

নরসিংদী প্রতিনিধি
🕐 ৫:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮

নরসিংদীর শিবপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রলি চালানোকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন। এরমধ্য এক কলেজছাত্রসহ দুই পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চৈতন্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল মাহাবুবু, কনস্টেবল বিল্লাল হোসেন। গুলিবিদ্ধ দুইজন হলেন- সবুজ পাহার কলেজের শিক্ষার্থী অহিদ্দুল্লাহ (১৯) ও গ্রামবাসী মোহন মিয়া (৪০)। তাদের বাড়ি শিবপুর উপজেলার চৈতন্যা গ্রামে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জান যায়।
তবে গ্রামবাসীর দাবি, মহাসড়কের পাশে বসা বিভিন্ন ফলের দোকান প্রতি একদিনে ৫০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করে হাইওয়ে পুলিশ। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইট বোঝাই একটি ট্রলি মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিলো। এসময় টহলরত হাইওয়ে পুলিশ ট্রলিটিকে আটক করে সাত হাজার টাকা আদায় করেন। এরই মধ্যে ট্রলিটি সাইড করতে গিয়ে রাস্তার পাশে গর্তে পড়ে যায়। পুলিশ গাড়িটিকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নিতে চালককে তাড়া দেয়। কিন্তু কোনোভাবেই ট্রলি গাড়িটিকে উঠাতে পারছিলেন না চালক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা ট্রলির চালককে মারপিট শুরু করেন।
এসময় মহাসড়কের পাশে বসা ফলের দোকানদারা এগিয়ে এসে মারপিটের প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা ফল দোকানির ওপর লাঠিচার্জ শুরু করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। এসময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে কলেজছাত্রসহ দুই পথচারী আহত হন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইসমাইল মিয়া বলেন, ‘ট্রলিটি আটকের পর পুলিশ চালকের কাছ থেকে জরিমানার কথা বলে সাত হাজার টাকা আদায় করেন। কিন্তু গাড়িটি গর্তে পড়ে যাওয়ায় চালক সেটিকে উঠাতে পারছিলেন না। তাই পুলিশ চালককে মারধর শুরু করেন। এসময় ফল ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর শুরু করেন। পরে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফল ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। মহাসড়কের পাশে দোকানদারি করে জীবিকা নির্বাহ করি। পুলিশ প্রতিদিন ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করতে তারা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।’
ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশের ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকারের চলমান কর্মসূচি ও দুর্ঘটনা রোধের অংশ হিসেবে মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ নছিমন করিমন ও ট্রলি বন্ধের অভিযান চলছিল। এরই মধ্যে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলামিন মেম্বারের একটি ট্রলিতে ইট বোঝাই করে মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ ট্রলিটিকে আটক করলে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা আমাদের দু’টি অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়।’
অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে শিবপুর থানার পুলিশ ছিনিয়ে নেওয়া অস্ত্র উদ্ধার করে আনে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

 
Electronic Paper