সদা সত্য বলিতে নাই
শিমুল শাহিন
🕐 ৬:২০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২১
ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র সোহাগ কল দিয়েছে। কুশল বিনিময়ের পর কয়েকটা কথা শুনেই বুঝলাম ওর মন খারাপ। সোহাগ বেশ প্রাণবন্ত ও সর্বদা হাসিখুশি ধরনের ছেলে। হঠাৎ কী এমন হলো, কোনো সমস্যায় পড়ল কি না তা জানতেই জিজ্ঞেস করলাম, ‘মন খারাপ কেন রে’
আমার প্রশ্নের উত্তর এলো না। উত্তর না পেয়ে আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘কথা বলছিস না যে’
এবার সে মুখ খুলল। বলল, ‘ভাই, আজ সত্য বলতে গিয়ে ফেঁসে গেছি! সদা সত্য বলিতে নাই!’
ওর কথা শুনে অবাক হলাম। এতদিন শুনে এসেছি মিথ্যে বলে লোকজন ফাঁসে। এক মিথ্যে ঢাকতে গিয়ে হাজারটা মিথ্যের আশ্রয় নিতে হয়, এর ফলে এই মিথ্যেই নাকি একসময় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সত্য বলে মানুষ কীভাবে ফাঁসে সেটাই আমার বোধগম্য হলো না। ওর হেঁয়ালি কথা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম, ‘সত্য বলে কেমনে ফাঁসলি, বল শুনি!’
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে একনাগাড়ে বলে গেল সোহাগ, ‘আজ বিকালে টুম্পাকে নিয়ে নদীর পাড়ে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। অনেকদিন পর বের হয়েছিলাম, বেশ ভালোই সময় কাটছিল। একটু ঘোরাঘুরি শেষে নদীর পাড়ের একটা বেঞ্চে বসে দুজন মিলে বাদাম খাচ্ছিলাম। ঠিক সেসময় আমাদের দেখতে পেয়ে পাড়ার রাজীব ভাই তার বউকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালেন।’
সোহাগ একটু থামতেই তাগাদা দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারপর’
যোগ করল সে, ‘তারপর টুম্পার দিকে তাকিয়ে রাজীব ভাই জিজ্ঞেস করলেনÑ মেয়েটা কে রে’
ওর কথার ফাঁকেই উচ্ছ্বসিত হয়ে বললাম, ‘তা উত্তরে কী বললি’
‘এইখানেই তো পড়লাম বিপাকে! কী বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না, তখনই মুখ দিয়ে হুট করে সত্যটা বের হয়ে গেল। বললামÑ ওর নাম টুম্পা, আমার ড়িঁষফ নব বী!’
সোহাগের এই ‘সত্য’ কথা শুনে হায় হায় করে উঠলাম। হাসতে হাসতে বললাম, ‘তারপর কী হলো’
চিমসে মুখে উত্তর দিল সোহাগ, ‘টুম্পা রাগে ফুঁসছিল। রাজীব ভাই আর ভাবি চলে যেতেই ও লবণসুদ্ধ বাদাম আমার দিকে ছুড়ে মেরে হনহন করে বাসায় চলে গেল। কিছুক্ষণ আগে মেসেজ দিয়েছে, সেখানে লিখেছেÑ ব্রেক আপ!’
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228