ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আন্টি না মন্টি

ফাতিন ইশতিয়াক ফয়সাল
🕐 ১:০০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০২১

আন্টি না মন্টি

সকালে ঘুম ভাঙতেই সজীব ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে দেখে নয়টা অতিক্রম হয়ে গেছে। জীবনের প্রথম চাকরির ইন্টারভিউ দেবে সে। কিন্তু পরীক্ষার বাকি মাত্র এক ঘণ্টা। যেভাবেই হোক তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। তাই এক লাফে বিছানা থেকে ওঠে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে। তড়িঘড়ি করে জামা-কাপড় পরিধান করে নাশতা না করেই অফিসের উদ্দেশে বের হয়। রাস্তায় আসার পর কোনো প্রকার যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটে অফিসে পৌঁছানোর পর প্রাক্তন প্রেমিকা তন্দ্রাকে ইন্টারভিউ বোর্ডে দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে সজীব।

ভাবতে থাকে কিভাবে পরীক্ষাটা এড়ানো যায়। তার মাথায় একটা বুদ্ধি এল। আজকে সে পরীক্ষা দেবে না বরং নেবে। কেননা সজীবের প্রস্তুতি মোটেও ভালো না। এমন কিছু করতে হবে যেন পরীক্ষা খারাপ হলেও তার প্রতি ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের সহানুভূতি জাগে। সে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে মঞ্চনাটকের আয়োজন করে। হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। প্রাক্তন প্রেমিকা জানে সজীব তার অভিনয় প্রতিভার গুণে মানুষকে কতটা বোকা বানাতে পারে। বিষয়টি বুঝতে পেরে সে অফিসের দারোয়ানকে ডেকে টাকা দিয়ে বাজারে পাঠান গোল মরিচ কিনে আনার জন্য। এদিকে অফিসের সবাই চিন্তিত। সেবা-শুশ্রষা চলছে পুরোদমে।

গোল মরিচ নিয়ে আসার পর সবার অগোচরে তন্দ্রা মরিচ ভেঙে পানিতে মেশায়। সেই পানি জ্ঞান ফেরানোর উদ্দেশ্যে যখনই সজীবের মুখের ওপর ছিটিয়ে দেওয়া হয় তখনি সে মা গো বলে চিৎকার দিয়ে ওঠে। তন্দ্রা বলে ওঠে, আমি তোমার মা নই, প্রাক্তন প্রেমিকা। আজ প্রাক্তন বলে আমাকে মা বলে বিদ্রুপ করছ, ঠাট্টা করছ। লজ্জা লাগে না তোমার?

কথাটি শোনার পর অফিসে হাসির রোল পড়ে গেল। সজীব দৌড়ে বাথরুমে গিয়ে চোখে অনেক্ষণ পানি ঢালে। ঝালের যন্ত্রণা কিছুটা প্রশমিত হওয়ার পর অফিস ত্যাগ করে। এমন একটি লজ্জাজনক অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম নেবে জানলে সজীব কিছুতেই মূর্ছা যাওয়ার ভান করত না।

দুই.
ব্যর্থ অধ্যায়ের শেষে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাসায় ফিরে বিছানায় শুয়ে বিষণœতা কাটাতে গান ধরে সজীব। গানের কিছু অংশ এমন ‘আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে আছ তুমি হৃদয়জুড়ে’। বেসুরে গলার রোমান্টিক গান শুনে মন্টি পড়ার টেবিলে কিছুতেই অঙ্ক মেলাতে পারছিল না। তাই ছুটে আসে শোবার কক্ষে। মন্টি অপরিচিত সজীবকে গান করতে দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠে। সজীব অবাক হয়।

-আপনি? আপনি কে? আমার কক্ষে ঢুকলেন কী করে? মন্টি ভাবে লোকটা পাগল নাকি আমাদের বাসার সোজায় পা বিছিয়ে দিয়ে মনের সুখে গান গাইছে আবার আমায় জিজ্ঞেস করে আমি কে! মন্টি উত্তর দেয়।
-আমি মন্টি। আপনি কে?
-আমি যে-ই হই তার আগে আপনি বলুন আন্টি কী করে একজন মেয়ের নাম হয়?
-আশ্চর্য! আমি আন্টি হতে যাব কেন?
আমি তো মন্টি বলেছি।

তাছাড়া আপনি আমাদের বাসায় কী করছেন? দাঁড়ান পুলিশকে খবর দিচ্ছি বলে মন্টি ঝাড়ু দিয়ে সজীবকে তাড়া করল।

সজীবের ততক্ষণে বোঝার বাকি নেই সে তৃতীয় তলার নয় নাম্বার রুমে না ঢুকে ছয় নাম্বার রুমে প্রবেশ করেছে এবং মন্টিকে আন্টি শুনেছে। তাই তার বিপদের ঘণ্টি বেজে গেছে।

শাল্লা, সুনামগঞ্জ

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper