ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বলিতেছি আজ কম খাইবেন পিয়াজ

আলম তালুকদার
🕐 ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ০৮, ২০১৯

নামের মধ্যেই খেয়াল করুন, পে আজ! বাংরাজিতে আগে মানে আজকেই এখনি ‘পে’ করতে হবে! পে+আজ=পেয়াজ। শুদ্ধভাবে খেতে হলে আপনাকে আগে দাম শোধ করতে হবে! যার কাছে এটা অতি মূল্যবান সে আগেই পে করার মতো যোগ্যতা অর্জন করে থাকে। কাজেই সমস্যা কী? পেপারে, নেটে, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়, হাটে-বাজারে, আড্ডায় এখন ক্যাসিনো আর পিয়াজ। এমনিতেই আছে ঝাঁজ তার মধ্যে আওয়াজ। আরও গতি আরও কাজ! চারিদিকে সাজ সাজ!

পিয়াজকে ফারসিতে বলে পলান্ড। ইংরেজিতে বলে ‘ওনিয়ন’। মানে ও নিয়েন! মানে কাউকে না কাউকে নিতেই হবে। পিয়াজ খুব একটা কুলীন সবজি নয়। হাদিসে পিয়াজ রসুনকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কারণ? কারণ দুর্গন্ধ। এই রে এসে গেছে। এক ব্রাহ্মণের ছেলের বিয়ের আলাপ চলছে। তো ঘটক মেয়ের বাবার কাছে পাত্রের গুণাবলি পেশ করছে। তা ছেলে শিক্ষিত, ফর্সা, লম্বা সব ঠিক আছে। তো হবু জামাইয়ের তো তেমন দোষ নেই? ঘটক বলছে।

-না, তেমন দোষ নেই। তবে শুনেছি মাঝে মধ্যে পিয়াজ খায়!
-কী বলছ? ব্রাহ্মণের ছেলে পিয়াজ খায়? জাত পাত সব গেছে!
-না, সবসময় খায় না তো। মানে যেদিন বন্ধুদের সঙ্গে বসে গরুর মাংস খায়!
-বলো কী? ব্রাহ্মণ হয়ে গরুর মাংস খায়! ছে ছে ছে! আরও গেছে!
-না কর্তা সবসময় খায় না তো। যেদিন একটু আধটু মদ খায় এই আর কি!
-অ্যা! মদ খায়?

-কর্তা সমসময় খায় না তো। যখন সুন্দরী মেয়ে পায়, শুধু সেইদিন খায়। একটু ফুর্তিটুর্তি করে এই যা! এটা এই জমানায় তেমন দোষের নয়! আপনি রাজি হতে পারেন, আজকাল পিয়াজ কি সবাই সেইভাবে খেতে পারে? সবার পিয়াজ কেনার সামর্থ্য নেই কর্তাবাবু।

তো, পিয়াজ এখন আর মর্ত্যে নেই, সে হয় ঊর্ধ্বে নয়তো গর্তে। সময় নেবে আকাশ থেকে পড়তে!

একবার হবু চন্দ্র রাজার আমলে এমনটা হয়েছিল। পিয়াজ বাজার থেকে গায়েব। উপায়? গবু এইবার সঠিক পরামর্শটা দিয়েছিল। সাতদিনের মধ্যে যদি পিয়াজের দাম নরমালে না আসে তাহলে আটদিনের দিন আড়তদারদের ধরে জোর করে কাঁচা পিয়াজ সব গিলতে হবে।

না পারলে পাছা দিয়ে সব পিয়াজ প্রবিষ্ট করানো হবে! এই ঘোষণার ফলে দেখা গেল পিয়াজের দাম কমে গেল। মানসম্মানের চেয়ে পাছা রক্ষা বিশেষ জরুরি। বাঙালিরা স্বাধীনতা চায় কিন্তু নিজে স্বেচ্ছাচারিতা পছন্দ করে।

পিয়াজের দাম ১০০ টাকা হাঁকার পরে ফেসবুকে দেখলাম তিন বন্ধু খাচ্ছে। একটা পিয়াজ ঝুলিয়ে রেখেছে। এক লোকমা খায় আর ঝুলন্ত পিয়াজ ধরে গন্ধ নিয়ে মজাসে খাচ্ছে! আরেক গিন্নিকে দেখলাম তরকারির পাতিলের উপর দিয়ে একটা পিয়াজ ঘোরাচ্ছে। তাতেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। ঘ্রাণং অর্ধনং ভোজনং। আরও একটা ছবি দেখলাম বিয়ের সাজে এক কনে। তাকে পিয়াজের গহনা দিয়ে সাজানো হয়েছে। এটাই এখন দামি গহনা! একজন মন্তব্য করেছে, আত্মীয় বাড়িতে মিষ্টি না নিয়ে এক/দুই কেজি পিয়াজ নিয়ে যান, তাতে আরও বেশি খুশি হবে।

উপরে উঠলে নামতেই হয়। হয়তো নামবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এই ফাঁকে অনেক বেশি কামাবে! অনেকের এখন কামানোর মোক্ষম সময়।

 

 

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper