চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। দিনে-দুপুরে ও রাতের আঁধারে একের পর এক চুরির ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। ঘরবাড়ি, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনকি মসজিদ, মন্দিরও চোরদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। কোথাও স্বর্ণালংকার, কোথাও নগদ টাকা, আবার কোথাও গবাদিপশু চুরি হয়েছে।
পৌরসভার ছেংগারচর বাজারের স্কুল রোডে পিকআপ সহ প্রায় শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল, ও ছেংগারচর বাজারের শ্রী শ্রী বিগ্রহ কালী মন্দিরের দান বাক্সের টাকা, কেশাইরকান্দী মসজিদের মাইক চুরির ঘটনাও ঘটেছে। অনেক এলাকায় সংঘবদ্ধ চোর চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। সামান্য শব্দ পেলেই আতঙ্কে চমকে উঠি। বারবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালেও তেমন কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।’
ছেংগারচর বাজারের ব্যবসায়ী লিটন সরকার বলেন, রাতে দোকান পাট বন্ধ করে বাড়ীতে চলে যাই, সকালে এসে দেখি আমার পিকআপ গাড়ী নেই, গাড়ীতে প্রায় শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল ছিলো। দোকানে এবং গোডাউনে সিসি ক্যামেরা থাকার পরেও চুরি হয়। থানা থেকে আমার দোকানটা ৫০০মিটারের মধ্যে।
ছেংগারচর বাজারের আরেক ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমার দোকান থেকে সবগুলো মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে গেলো চোরচক্র। বাজারের মধ্যেই মতলব উত্তর থানা আর এখানেই যদি এরকম চুরি, ছিনতাই এর ঘটনা ঘটে তাহলে পুরো উপজেলার কি অবস্থা? সিসি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে চোর সব কিছু নিয়ে যাচ্ছে তারপরও এখন পর্যন্ত চোরকে আটক করতে পারে নাই পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীরাও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, চুরির ভয়ে দোকানে অতিরিক্ত পাহারার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে, এতে বাড়ছে খরচ। অনেক ছোট ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক বলেন, চুরির ঘটনা রোধে আমরা নিয়মিত টহল জোরদার করেছি। অপরাধ দমনে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তবে এলাকাবাসীর দাবি, শুধু আশ্বাস নয় চুরি ও অপরাধ দমনে দ্রুত কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে মতলব উত্তরে ‘চোরের রাজত্ব’ আরও ভয়াবহ রূপ নেবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
কেকে/ এমএস