জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর এবং মিষ্টি বিতরণ করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদামতলায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচিতে গকসুর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে দেখা যায়। এ সময়ে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন—‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, হাসিনাকে ফাঁসি দে’; ‘হ তে হাসিনা, হ তে হত্যাকারী’; ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’।
এদিকে, প্রতীকী ফাঁসি কার্যকরের পর তারা শেখ হাসিনার প্রতীকীতে জুতা নিক্ষেপ করেন।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে ১৭ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অত্যাচারিত মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুনিয়া রহমান বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাসে হাসিনার প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে, এতে আমরা খুশি। তবে যেদিন হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে প্রকৃত ফাঁসি কার্যকর হবে, সেদিন জুলাই আন্দোলনের শহীদরা ন্যায় বিচার পাবে।”
আয়োজক রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম খান বলেন, “হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি কার্যকর করার মধ্য দিয়েই এ দেশের মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। একই সাথে জুলাই আন্দোলন থেকে সাধারণ জনগণ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। এ দেশে একাত্তরে হত্যা চালিয়ে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিল, তেমনি চব্বিশে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে হাসিনাকে ভারতে পালাতে হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ, যেখানে মূলনীতি হবে সাম্য, সামাজিকতা ও ন্যায় বিচার।”
গকসুর সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সামিউল হাসান শোভন বলেন, “হাসিনার প্রতীকী ফাঁসির মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে সকল অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ন্যায়ের পথে এবং মানবতার পক্ষে রয়েছি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যেন কোনো ফ্যাসিস্টের আধিপত্য ছড়াতে না পারে, তার জন্য আমরা সকলে এক হয়ে কাজ করব।”
এর আগে ১৯ নভেম্বর প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেদিন সংগীত বিভাগের শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত এ মাওলা জিন্নাহ মারা যাওয়ায় তা স্থগিত করা হয়। পরে ২৩ নভেম্বর কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হলেও সেদিন ইংরেজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ আখতার-উল-আলম সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে আবারও তা স্থগিত করা হয়। শেষ পর্যন্ত আজ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কেকে/ আরআই