আজ আবারও ভূমিকম্প হওয়ায় গাজীপুরের পোশাক শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই ভয়ে কাজে যাননি।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে এই কম্পন রেকর্ড করা হয়। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল, তিন দশমিক তিন। গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দ্বিতীয় দিনের মত ভূমিকম্প হওয়ায় শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নরসিংদীর মাধবদীতে ভূমিকম্পের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই সাভার ও গাজীপুরের মাঝামাঝি বাইপাইল এলাকায় আবারও কম্পন রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র।
কোনাবাড়ী এলাকার এক পোশাক শ্রমিক জাহিরুল ইসলাম (৪০) বলেন, গতকালকে আমার কারখানা বন্ধ ছিল। গতকালকের ভূমিকম্পের খবর পেয়ে আজকে আমি ভয়ে কারখানায় যাইনি।
শ্রীপুরের এক পোশাক কারখানা শ্রমিক মোছা. রিমো আক্তার বলেন, ভূমিকম্পের খবর পেয়ে আমি তিনতলা থেকে নিচে নেমে আসার চেষ্টা করি। হঠাৎ করে পা পিছলে নিচে পড়ে যাই। কিছুটা ব্যথা পেয়েছি।
শ্রীপুরের ডেনিম্যাক কারখানার শ্রমিক শাহীন বলেন, আমি গত কালকে কারখানার ভিতরে ছিলাম। যখন ফায়ার এলার্ম শব্দ শুরু করে তখন আমি দৌড়ে নিচে নেমে যাই। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমরা যখন নিচে নামি তখন আমাদের কারখানার মূল ফটক বন্ধ ছিল। গেইট খুলতে বেশি দেরি করে ফেলে কর্তৃপক্ষ। পরে শ্রমিকেরা মূল ফটক ভেঙে বের হয়ে যায়।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর মহানগর সভাপতি শফিউল আলম জানান, স্মরণকালের সেরা ভূমিকম্প হয়েছে বাংলাদেশে। পরপর দুইবার ভূমিকম্প হওয়ায় গাজীপুরের শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা শুনেছি, বিভিন্ন কারখানার মূল ফটক বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে শ্রমিকেরা বিপদের সম্মুখীন হয়েছে। শ্রমিকরা নির্বিঘ্নে তাদের নিরাপদ স্থানে যেতে পারেননি। কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা ছিল। আমি বলবো, শ্রমিকরা যাতে নির্বিঘ্নে কর্মস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে যেতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ বলেন, গতকাল ডেনিম্যাক কারখানার আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা চলছে। তবে কারখানায় আজ থেকে সকল প্রকার কার্যক্রম শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
আজ শনিবার বিকালে, গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন খোলা কাগজকে জানান, গাজীপুরের শ্রমিকদের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে আতঙ্কের মাঝেও আজকে শ্রমিকদের কোন সমস্যা হয়নি। গাজীপুর শিল্প জোনে অনেক সময় কিছুটা রিউমার সৃষ্টি হয়। সেটা যাতে না হয় এ বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।
ভূমিকম্পের সময় অনেক কারখানার মূল ফটক বন্ধ থাকে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা তথ্য সিকিউরিটি গার্ড পর্যন্ত আসতে কিছুটা সময় লাগে। তার মাঝে শ্রমিকেরা নিচে চলে আসে। কারখানা কর্তৃপক্ষ যাতে তাত্ক্ষণিকভাব কারখানার গেট খুলে দেন সে বিষয়ে কারখানাগুলোকে জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এটি একটি মাইনর ভূমিকম্প। এর উৎপত্তিস্থল বাইপাইল।
কেকে/লআ