বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, অধিকার আর ইনসাফ প্রতিষ্ঠা না হলে আগামীতে আবারও গণঅভ্যুত্থান অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, “দুর্বৃত্ত অর্থনীতির অবসান না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না। আইসিটি ট্রাইব্যুনালের আজকের রায় প্রমাণ করেছে—স্বৈরশাসকেরাও কেউই আইন ও বিচারের উর্ধ্বে নয়।”
রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকালে টাঙ্গাইল শহীদ মিনার চত্তরে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “যেকোনো মূল্যে গণঅভ্যুত্থানের গণআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। এবার অধিকার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা না গেলে অদূর ভবিষ্যতে আর একটি গণ অভ্যুত্থান অপরিহার্য হয়ে উঠবে। সংবিধানসহ প্রশাসনের রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি লুটেরা দূর্বৃত্ত অর্থনীতির অবসান ঘটাতে না পারলে কোন সংস্কারই টেকসই হবে না।”
মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর সংগ্রামী স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক হীনমন্যতার কারণে এখানকার সরকার ও শাসকগোষ্ঠী মওলানাকে উপযুক্ত মর্যাদা দিতে পারেনি।”
মওলানা ভাসানীকে দেশের স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ হিসাবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “যতদিন শোষণ আর বৈষম্য থাকবে ততদিন ভাসানী আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে থাকবেন—দ্রোহ আর বিদ্রোহের প্রতীক হিসাবে তিনি থাকবেন।”
আজ আইসিটি ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের রায় সম্পর্কে তিনি বলেন, “এই রায়ে প্রমাণ হয়েছে স্বৈরশাসকেরাও কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার বিচার যেমন প্রতিশোধের বিষয় নয়, ২৪ এর হত্যাকাণ্ডের বিচারও কোনো শোধ-প্রতিশোধের বিষয় নয়। হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে না। ভবিষ্যতে কেউই আর যেন রাষ্ট্র ক্ষমতা ব্যবহার করে নারকীয় শাসন আর হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করতে না পারে—এই বিচার সেক্ষেত্রে বড় মাইলফলক হিসাবে কাজ করবে।”
অন্যান্য বক্তারা মজলুম জননেতা ভাসানীর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পালনের জন্য দাবি জানান।
পার্টির টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সভাপতি সাইফুর রেজা মামুনের সভাপতিত্বে ও আওয়াল মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান পিপলু, মওলানা ভাসানী দৌহিত্র মাহমুদুল হক সানু, সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, এমডি ফিরোজ, কেন্দ্রীয় সংগঠক যুবরান আলী জুয়েল, জেএসডির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান মতি প্রমুখ।
এর আগে আজ সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪৯ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার মাজারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাইফুল হক, পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, এমডি ফিরোজ, কেন্দ্রীয় সংগঠক যুবরান আলী জুয়েল, পার্টির টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সভাপতি সাইফুর রেজা মামুন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান পিপলু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আউয়াল মাহমুদসহ শতাধিক নেতাকর্মী।
কেকে/এজে