বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারেনি। এর মধ্যেই আগামী সোমবার (১৭ নভেম্বর) স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছে ইসলামি ছাত্রশিবির বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
এবছর ১৩ আগস্ট ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী হতাশা প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে একটি উৎসবমুখর নবীন বরণ তাদের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে সহায়তা করে। তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসনের উদাসীনতা তাদের হতাশ করেছে।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রিফাত হোসেন বলেন, “তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো নবীন বরণ অনুষ্ঠিত না হওয়ায় আমরা শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই আয়োজনটি নতুনদের অনুপ্রাণিত করে, পরিচিতির সুযোগ সৃষ্টি করে এবং একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অনুষ্ঠান না হওয়ায় নিজেদের উপেক্ষিত মনে করছি। আমরা দ্রুত নবীন বরণের তারিখ ঘোষণা এবং যথাযথ আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি।”
এদিকে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরুর পর থেকেই ছাত্রশিবিরের কমিটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বড় ধরনের প্রকাশ্য প্রোগ্রাম করতে না পারলেও প্রতি বছরই স্বল্প পরিসরে বা গোপনে অনুষ্ঠান করেছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের একাধিক নেতা।
গত বছর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এবার প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে নবীন বরণ করতে যাচ্ছে তারা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। নবীনদের জন্য উপহার হিসেবে থাকছে টি-শার্ট, শাল, ডায়েরি, কলম, চাবির রিং ও বই।
এর আগে চলতি মাসের ৪ তারিখ ‘এক শিক্ষার্থী এক কুরআন’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২,৫০০ কুরআন বিতরণ করেছে তারা, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম।
ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও তা কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইশা, ছাত্রকাউন্সিলসহ সব রাজনৈতিক সংগঠন অনায়াসে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলা হলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রশাসন শুধু জানিয়েছে, “বিষয়টি শুনেছি, বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশ ও সৃজনশীল প্রতিভা বিকশিত করার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবির ২০২৪-২৫ শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গাইডলাইন ও নবীন বরণ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক এবং উচ্চশিক্ষায় পৌঁছানোর জন্য একটা গোছানো গাইডলাইন থাকবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা মিলন মেলা এবং দৃঢ় বন্ধন সৃষ্টি হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর। ইসলামী ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার আলোকে শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে, ইনশাআল্লাহ।”
নবীন বরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, “আজকে মিটিং ডেকেছি, মিটিংয়ে উপস্থিত সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নবীন বরণের আয়োজন করা হবে।”
কেকে/ আরআই