চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নে সরকারি পাহাড়ের টিলা কাটার ঘটনায় এক শ্রমিকের মৃত্যুর পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত সম্পন্ন করে মামলা দায়ের করেছে।
সোমবার (১০নভেম্বর) কর্তনকৃত স্থান পরিদর্শন শেষে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন বাদী হয়ে ভূজপুর থানায় স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতাসহ পাঁচজনকে আসাসি করে মামলা করেন।
মামলার আসাসিরা হলেন ভূজপুর থানার দাঁতমারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম চৌধুরী (৫০), সহ-দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশীদ প্রকাশ পোল্ট্রি মামুন (৩৬), মো. সিরাজুল ইসলাম (৫৫), মো. শাহাদাত হোসেন প্রকাশ ভাগিনা শাহাদাত (৩২) ও মিয়া সওদাগর (৫৫)। তারা সকলে দাঁতমারা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর দৈনিক খোলা কাগজে ‘ক্ষতবিক্ষত টিলার আর্তনাদ শোনে না প্রশাসন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর পরিবেশ অধিদপ্তর জড়িতদের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের সোনারখীল মৌজার অধীনে ৪ নম্বর সিটের আওতায় বালুখালী চামাঘোনা মনাইয়ার দোকান এলাকায় দাঁতমারা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মামুনর রশিদ মামুনের নেতৃত্বে এ টিলা কাটা চলছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে স্থানীয় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে প্রকাশ্যে সরকারি খাস অধিভুক্ত টিলা কর্তন ও পাচার চললেও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা জনমনে প্রশ্ন তোলে। গত ২৬ অক্টোবর রাতে টিলা কাটার সময় মাটিচাপা পড়ে মো. আরিফ (২০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে রাজনৈতিক প্রভাব ও সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় টিলা ধ্বংসের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত নির্বিচারে পাহাড়-টিলা কর্তন করে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি করছেন বিবাদীরা। যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫’-এর (সংশোধিত ২০১০) ধারা ৬ (খ) ও ১২ ধারা এবং ধারা ১৫’-এর উপধারা ১-এ বর্ণিত টেবিলের ক্রমিক ৫ ও ১২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ চলবে।’
কেকে/এমএ