বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরও সাত, হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৭      ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প      দুদকের সব কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক সম্পত্তির হিসাব দিতে হবে      প্রাথমিক শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি      নির্বাচনী জোটের আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে : রাশেদ খান      গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনের বিকল্প নেই : আমান      সিসিইউতে খালেদা জিয়া      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
ভোটের ছায়ায় বাংলাদেশ
গণতন্ত্রের পথ নাকি প্রহসনের পুনরাবৃত্তি
মো. আজমির হোসেন
প্রকাশ: রোববার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৪৮ পিএম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ এখন এমন এক রাজনৈতিক মোড়ে দাঁড়িয়ে, যেখানে নির্বাচন শুধু ক্ষমতার পালাবদলের মাধ্যম নয়, এটি হয়ে উঠেছে গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা, গ্রহনযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাইয়ের সর্বশেষ পরীক্ষা। ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ভোটের মাঠের উত্তেজনা।

এইমুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি এক বিশাল শক্তিশালী পক্ষ হিসেবে সাবেক ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ ও তার মিত্রহীন মাঠে তাদের শক্তি সামর্থ্য ও জনসমর্থন প্রদর্শনে ব্যস্ত। দলটি ইতিমধ্যে ২৩৮টি সংসদীয় আসনে তাদের একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাগন বলছে, “উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজনৈতিক  স্থিতিশীলতা চাই”, আর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চাওয়া বিরোধী পক্ষের যুক্তি—“ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন টেকে না, দীর্ঘস্থায়ী হয় না”।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিদ্যমান এই দ্বন্দ্বই আজকের রাজনীতিকে দুই মেরুতে ভাগ করেছে নানান অযুহাতে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করে বিলম্বিত করে উপদেষ্টাদের ক্ষমতা রক্ষার রাজনীতি বনাম ভোটাধিকার এর মাধ্যমে দেশের হারিয়ে যাওয়া গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের রাজনীতি।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর গত তিনটি নির্বাচনের মতো এবারও সাধারণ জনগণের মনে এক বড় প্রশ্ন—এই নির্বাচন কি হবে প্রকৃত রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, নাকি আবারও একতরফা ভাগ ভাটোয়ারার নির্বাচন?  আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের শক্তিশালী জোট হিসেবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন দলগুলোই ভোটের মাঠে এখন সক্রিয়। হেভিওয়েট ছোট দলের বড় রাজনৈতিক নেতাগুলো বিএনপির সাথে জোট গঠনে বেশি আগ্রহী।

ইসলামি দলগুলোর জোট গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ প্রায় এক ডজন ইসলামপন্থী ও মধ্য-ডানপন্থী দল। এই জোট দাবি করছে—“অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই হবে জনগণের রায় যাচাইয়ের একমাত্র পথ। তাদের যেকোনো এক দলের প্রার্থী থাকবে একটা আসনে। যে আসনে এক দল প্রার্থী দিবে সেই আসনে আর কোন দল প্রার্থী দিবে না।”

অন্যদিকে, দল হিসেবে নিবন্ধন হারানো, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তার ঐতিহ্যবাহী সহযোগী জাতীয় পার্টির (জাপা) ২০২৬ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ভবিষ্যৎ এখন পুরোপুরি অনিশ্চিত। দেশীয়-আন্তর্জাতিক মহলের চাপ, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভক্তি এবং মাঠে নেতাকর্মী ও জনসমর্থনের ঘাটতি তাদের রাজনৈতিক পুনরুজ্জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। জাপার নেতৃত্বে চলছে ভাঙন, তীব্র মতবিরোধ, আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারা বা না পারার সীমারেখা এবং প্রার্থীদের মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির অবস্থান আজ ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বল ও অনিশ্চিত।

দীর্ঘ দেড় যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকার পর, আওয়ামী লীগের আমলে নানান মামলা হামলা মোকাবিলা করে দীর্ঘ রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তার পর বিএনপি এবার কৌশলগতভাবে মাঠে নেমেছে। দলটি জানে—“এই নির্বাচন তাদের জন্য শুধু একটি রাজনৈতিক ইভেন্ট নয়; এটি হবে তাদের ক্ষমতা পুনর্গঠনের সুযোগ, তাদের সমর্থকদের দলের প্রতি পুরনো বিশ্বাস পুনর্গঠনের লড়াই।” বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, তারা আন্দোলন ও সবাইকে বাদ দিয়ে নয় বরং সব দলের অংশগ্রহণ ও ন্যায্যতার মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন চান।

বিএনপি এখন আগের তুলনায় রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। তাদের সঙ্গে থাকা জোট সম্ভাব্য মিত্র দলগুলো, অনেক বাম-ডান ও ইসলামি দলগুলো এইমুহূর্তে দেশের শহর, বন্দর ও গ্রামীণ ভোটব্যাংকে শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে পারে।

বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে সুপরিচিত জামায়াতে ইসলামীর পুনরায় শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে প্রত্যাবর্তন এবং অনেকগুলো ইসলামী দলগুলোর সমর্থন নিয়ে ক্রমবর্ধমান জনসম্পৃক্ততা দেখায় যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আবারও প্রভাব বিস্তার করছে, বিশেষ করে সদ্য সমাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরের নিরংকুশ বিজয় পাওয়া, উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভোটের মাঠে তাদের আধিপত্য বিস্তার।

তবে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে আসন্নএই জোটের প্রধান চ্যালেঞ্জ—নেতৃত্বের ঐক্য ও নীতিগত সামঞ্জস্য। জামায়াতে ইসলামীর প্রধান নেতৃত্ব নিয়ে হেফাজতের প্রকাশ্য বিরূপ মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া চলমান আছে। সেই সাথে
যদি তারা নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রার্থী বণ্টনে ঐক্য বজায় রাখতে পারে, তবে এই জোট দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ক্ষমতার কেন্দ্রে বা কাছাকাছি হয়তো ফিরে আসতে পারে।

জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এদেশের রাজনৈতিক ময়দানে এখন আলোচনার শক্তিশালী কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মাঠের অবস্থান, মাঠের সাংগঠনিক চিত্র, যুবনেতৃত্ব ও ভোটাধিকার গণতন্ত্র নিয়ে মাঠপর্যায়ের গতিশীলতা নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। এনসিপি নিজেদের “জাতীয় ঐক্য ও স্বচ্ছ শাসনের প্রতীক” হিসেবে তুলে ধরছে যা তরুণ, শিক্ষিত প্রজন্ম ও প্রথমবার ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দলটি প্রকাশ্যে এখনো কারো সাথে রাজনৈতিক জোট গঠন না করলেও গোপনে বিএনপির সাথে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির সমালোচনাকারীগন, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির মিত্রদের মতে, এনসিপি হবে আগামী নির্বাচনে “ব্যালান্সিং ফোর্স”—যাদের অবস্থান নির্ধারণ করবে কে সরকার গঠন করবে। তবে এনসিপি নেতৃত্বের প্রতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিএনপি জোট ও ইসলামি জোটের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গণভিত্তি সম্প্রসারণ করা। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার  এনসিপিকে সরাসরি ভোটের মাঠের রাজনীতিতে সহযোগিতা করছে বলে বিএনপি বারবার অভিযোগ তুলে ধরছে। এনসিপি যদি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভালো ফলাফল না করার সুযোগ পায় তাহলে “আওয়ামী লীগ বিরোধী জাতীয় ঐক্য ভাঙার কৌশল” হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে যা নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলবে। এইজন্য বিএনপির হাইকমান্ড এনসিপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে সরকারের অংশ হিসেবে সংসদে নেয়ার পক্ষপাতি।

দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখে।  আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথ—স্পষ্ট করে বলেছে, “সব দলের অংশগ্রহণ ও আস্থাবিহীন নির্বাচন গণতন্ত্র নয়।” যদি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত না হয়, তাহলে নির্বাচনী ফলাফল যতই শান্তিপূর্ণ হোক, তা বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে না।

ইতিহাস বলছে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সরাসরি প্রশাসনিক পক্ষপাত ছিল শতভাগ ও বিরোধীদলের দমননীতি জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভ তৈরি করেছিল। তাই এবার ইসি যদি সত্যিকারের স্বাধীনতা, অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে বিগত তিনবারের মত “ভোট” আবারও “প্রহসনে” রূপ নেবে।

যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশের স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র কল্পনাই করা যায় না। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মব সন্ত্রাসের ব্যাপক ঘটনা, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিক নির্যাতন এবং সরকারি হস্তক্ষেপে অনলাইন নিয়ন্ত্রণের ফলে মতপ্রকাশের পরিসর নানানভাবে সঙ্কুচিত হয়েছে। যখন জনগণ একটি দেশের প্রকৃত তথ্য জানতে পারে না, তখন ভোট হয়ে যায় অন্ধকারে সিদ্ধান্ত নেওয়া এক গোপন আয়োজন। এরই প্রেক্ষিতে অতীতের আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মত পর্দার অন্তরালে লোক দেখানো সরকার গঠন ও নিজেদের সমঝোতার ভিত্তিতে বিরোধী দল বানানোর নির্বাচন নাটকও মঞ্চস্থ হতে পারে।

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামি বারবার অভিযোগ তুলছে, গণমাধ্যমে তাদের কণ্ঠ বন্ধ করা হচ্ছে, প্রশাসনিক প্রচারযন্ত্র শুধু একদলীয় এনসিপির বয়ান প্রচার করছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে নির্বাচনী “সমতা” একটি তাত্ত্বিক শব্দ হয়েই থাকবে। এনসিপি যেইভাবে সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোশকতা পায় তা বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামী পাচ্ছে না। আর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কার্যক্রম দুরের কথা দলটি বা সহযোগী সংগঠনগুলো দেশের কোথাও প্রকাশ্যে মিছিল বের করতে পারে না।

বাংলাদেশের রাজনীতি এখন মূলত তিন ভাগে বিভক্ত। বিএনপি জোট ও এনসিপি যারা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের মাধ্যমে পরিবর্তনের পক্ষে। অবশ্য জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন জোট, যারা জুলাই সনদ নিয়ে গগণভোট আগে আয়োজন করা, রাজনৈতিক সংস্কার করার পর প্রয়োজন হলে আরও অনেক দেরিতে নির্বাচন করার জন্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দিচ্ছে।

এদিকে নিবন্ধন হারানো আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি গোষ্ঠী, যাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
অন্যদিকে, গণ অধিকার পরিষদসহ অনেক ডান-বামপন্থী দলসমূহ (গণ সংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সিপিবি) নীতিগতভাবে ভোটে অংশ নিতে চাইলেও, তারা শেষ পর্যন্ত কোনো বড় জোটের সঙ্গেই যুক্ত হবে সম্ভবত এনসিপি বা বিএনপি জোটের সঙ্গে মতাদর্শিক মিল খুঁজে।

তবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক বাস্তবতা হচ্ছে একক দলীয় জয় এখন অনেকটাই অসম্ভব। তাই বিএনপির মত বড় রাজনৈতিক শক্তির দলও ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেয় নাই। তাদের সম্ভাব্য জোটের জন্য ৬০ এর অধিক আসন খালি রেখেছে।  জামায়াত এবং ইসলামি দলগুলো প্রতি আসনে যেকোনো এক দলের প্রার্থী দিবে। যে জোট পারস্পরিক ছাড় দিতে পারবে, সংলাপ ও সমঝোতার রাজনীতি করতে পারবে হয়তো ২০২৬ সালে সরকার গঠন তারাই করবে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতি আজ রাজনীতির জিম্মি। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি সবই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার ফল। বিশ্লেষকদের মতে, “রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এখন শুধু ক্ষমতা নয়, অর্থনৈতিক বেঁচে থাকার শর্ত।”

যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত হয়, একতরফা হয় কিংবা হানাহানির হয় তাহলে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি কমবে। তাই সরকারে বা বিরোধী দলে যেই দল বা জোটই আসুক, প্রথম কাজ হবে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা ও প্রশাসনিক সংস্কার করা।

বাংলাদেশের রাজনীতি এখন বিশ্বাসের সংকটে ভুগছে। এই বিশ্বাস পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজন বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ। ২০২৬ এর ভোট যদি বিশ্বাসহীন হয়, গণতন্ত্র তখন কেবল কাগজের শব্দ হয়ে থাকবে জনগণের সম্পৃক্ততা হবে না ।

বিএনপি কিংবা জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য সকল সম্ভাব্য জোট যদি ন্যায্য অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে পারে, তবে একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সরকার গঠনের বাস্তব সম্ভাবনা আছে। তবে সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এনসিপির শক্ত উপস্থিতি, যারা নতুন প্রজন্মকে প্রভাবিত করতে পারে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ ও জাপার অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ইঙ্গিত দেয় বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নতুন ভারসাম্য খুঁজছে। সর্বোপরি প্রশ্ন একটাই, এই নির্বাচনে বাংলাদেশ কি গণতন্ত্রের নবজাগরণ দেখবে, নাকি আবারও পুরাতন রাজনৈতিক প্রহসনের পুনরাবৃত্তি হবে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত হলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের ছায়াতেই লুকিয়ে আছে বাংলাদেশের আগামী রাজনীতির রূপরেখা। যেখানে আস্থা, অংশগ্রহণ ও ন্যায্যতাই নির্ধারণ করবে জাতির ভবিষ্যৎ।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদ, ডীন ও চেয়ারম্যান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

কেকে/ আরআই
আরও সংবাদ   বিষয়:  ভোট   গণতন্ত্র  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও অবকাঠামো সংকট, চরমে দুর্ভোগে বিয়ানীবাজারবাসী
আবুল সরকারকে মুক্তি দিলে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা মাদানীর
অনাকাঙ্খিত মৃত্যু থেকে বাঁচার দোয়া

সর্বাধিক পঠিত

পঞ্চগড়-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূর
নাটোর-১ আসনে এবি পার্টির প্রার্থীর বিলবোর্ড ভাঙচুরের অভিযোগ
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প
পাটগ্রাম উপজেলায় সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারে 'চতুরবাড়ী বিওপি'র যাত্রা
থাইল্যান্ডে যাচ্ছে তরুণ উদ্ভাবক দল সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিকস ক্লাব

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close