গাজীপুরের শ্রীপুরে দুটি ট্রেন পাশাপাশি স্টেশন থেকে ধীর গতিতে চলতে শুরু করেছে। ঠিক সেই মুহুর্তে দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে যান কৃষক জালাল উদ্দীন (৪৫)। পুরো ট্রেন তার ওপর দিয়ে চলে গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি।
রোববার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি জালাল উদ্দীনের। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত পৌনে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে।
জালাল উদ্দীন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআগলী ইউনিয়নের নিধিরচর গ্রামের মো. তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর আগে জালাল উদ্দীন জানান, শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল মোহনগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন। এ সময় তিনি ট্রেনে উঠতে দৌড় দেন। একই সময়ে স্টেশনের এক নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটিও ছেড়ে দেয়। এ সময় পা পিছলে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যান তিনি।
এর পরের ঘটনা তিনি আর বলতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্টেশনে দুটি ভিন্ন লাইনে দুটি ট্রেন দাঁড়ানো ছিল এবং একই সঙ্গে ট্রেন দুটি ছাড়া শুরু করে। হঠাৎ জালাল উদ্দীন এক নম্বর লাইনে দৌড়ালে পা পিছলে চোখের পলকে ট্রেনের নিচে পড়ে যান। জামালপুর কমিউটার ট্রেনটি তার ওপর দিয়ে চলে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পরপরই স্টেশনের লোকজনের সহযোগিতায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলছিলেন এবং নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারছিলেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
চরআগলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম দুলু বলেন, ‘রাতেই তিনি মারা গেছে। সোমবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।’
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘রোববার রাত ৯টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েকজন মানুষ জালাল উদ্দীন নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাকে যখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, তখন তিনি জীবিত ছিল। বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ তদারকি করছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’
কেকে/এমএ