পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বেড়েছে আগের তুলনায়। তাদের কাছ থেকে সকাল-বিকাল চাঁদা আদায় করছে বলে জানিয়েছে ক্ষুদে ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা। এই চাঁদা তুলছে আরেক ব্যবসায়ী সাহিন ও গলায় টিউমার আছে এমন এক ব্যক্তি। মাসে লাখ টাকার চাঁদা কার হাতে যাচ্ছে এমন প্রশ্নে নাম প্রকাশ করতে নারাজ ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা।
সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট, হোটেল সায়মন পর্যন্ত প্রায় হাজারের অধিক ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে আসছে। বিগত দিনে বালিয়াড়িতে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কম দেখা গেলেও এখন তুলনামূলক ব্যবসায়ী বেড়েছে এমনটা নজরে এসেছে প্রতিবেদকের। বিশেষ করে আমড়া বিক্রেতা, চনামুড়ি বিক্রেতা, পান বিক্রেতা ও খেলনা বিক্রেতাসহ বেশকিছু সামগ্রী নিয়ে সৈকতে ব্যবসা করছে তারা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সরেজমিনে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটি সিন্ডিকেট সকালে ৫০ টাকা এবং সন্ধ্যায় ৩০ টাকা প্রতি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলে। তবে এই টাকা কোন প্রশাসন তুলছে নাকি অন্য কোন সিন্ডিকেট তুলছে তা জানেন না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা বলছে, এখানে অনেকেই লাখ টাকার দোকান নিয়ে ব্যবসা করছে। আমি লাখ টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে পারবোনা বিধায় ছোট ব্যবসা করছি। টাকা তুলতে যারা আসে তাদের প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা টাকা দিয়ে আমরা ব্যবসা করে আসছি।
চনামুড়ি বিক্রেতা আব্দুল মালেক জানান, আমার কাছ থেকে সকালে ৩০ টাকা ও সন্ধ্যায় ৩০ টাকা নেয়। যারা ব্যবসা বেশি করে তাদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
আমড়া বিক্রেতা ক্ষুদে ব্যবসায়ী নবী আলম জানান, এখানে টাকা তোলা হয় আমিও দিই। আমাকে সকালে ৫০ টাকা ও সকালে ৩০ দিতে হয়।
তিনি আরো জানান, আগে আমি আনারকলি ব্যবসা করতাম। এখন আনারস ও আমড়ার চাহিদা থাকার কারণে আমি ব্যবসার ধরণ বদলেছি। আগে সকাল বিকাল ৩০টাকা নিতো কিন্তু কয়েকদিন ধরে সকালে ৫০ টাকা ও সন্ধ্যায় ৩০ করে নিচ্ছে। তবে কারা এই টাকা নিচ্ছে আমার জানা নেই। তবে আমাদের কাছ থেকে একজন মানুষ আসে তার গলায় টিউমার আছে আরেকজন বেলপুরী বিক্রেতা সাহিন আসে এই টাকা নিতে। এখানে একটি সিন্ডিকেট আছে তাদের অমান্য করে আমি ব্যবসা করতে পারবো না। যার কারণে আমার এখানে আসলে আমি টাকা দিয়ে দিই।
এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ জড়িত কিনা তা জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা জানান আসলে এই টাকা কারা নেন আমরা জানি না। আমাদের কাছে যে আসে তাকে আমরা চিনি সেও আমাদের মতো ব্যবসা করে।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের সহকারী ডিআইজি আপেল মাহমুদ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে আমি অবগত আছি। তবে আমার ট্যুরিস্ট পুলিশ এখানে জড়িত নয়। যদি চাঁদায় করার সময় আমাদের খবর দেন তবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান জানান, জেলা প্রশাসন থেকে এমন কোন অনুমতি প্রদান করা হয়নি। আমরা খোঁজ নিয়ে তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কেকে/ আরআই