চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরে আইন অমান্য করে জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পুড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। উপজেলার ৩০টি ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহারের ব্যবস্থা নিলেও ২০ ইটভাটায় স্তুপ করা হচ্ছে বন থেকে কাটা লাকড়ি।
উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া, হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দাবন-বেনারস, পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ও রাউজান সদর ইউনিয়নের পূর্ব রাউজান এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
অপরদিকে, ২০২৪ সালে জেলা পরিষদের পরিবেশ লাইসেন্স ও অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে অবৈধভাবে কাঠ জ্বালিয়ে ইটভাটা পরিচালনার অভিযোগে গুড়িয়ে দেওয়া ইটভাটা পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পরিবেশ আইন তোয়াক্কা না করে রাবার বাগান ঘেঁষে কিছু কিছু ইটাভাটা পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইটভাটায় আগুন দেওয়ার আগে জ্বালানি কাঠ ব্যবহারকারী ও রাবার বাগান ঘেঁষে গড়ে উঠা ইটভাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠন।
গত বছর পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গুঁড়িয়ে দেওয়া ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া এলাকার বিবিসি নামক একটি ইটভাটা পুনরায় চালু করেছে। ডাবুয়া রাবার বাগান ঘেঁষে এ ইটভাটা বাংলা চিমনি স্থাপন করে জ্বালানি হিসাবে স্তুপ করেছে কাঠ। বনের কাঠ কেটে জ্বালানির স্তুপ করায় জনমনে দেখা দিয়েছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। এই ইটভাটায় আগুন দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মালিক।
বিবিসি নামক ইটভার ম্যানেজার শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘এই ইটভাটার মালিক সৈয়দ হোসেন কোম্পানি। এ ভাটায় কয়লার পরিবর্তে জ্বালানো হবে বন থেকে সংগ্রহ করা কাঠ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক সাথে ৯ লাখ করে ইট পুড়ানো হবে। গত বছর ৮ রাউন্ডে ৬৩ লাখ ইট বিক্রি করা হয়েছিল।’
এছাড়াও মেলুয়া এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের গুঁড়িয়ে দেওয়া আরও তিনটি ইটভাটা নতুন করে চালু করতে প্রস্তুতি নিয়েছে। একই সাথে ইটভাটায় আগুন দিতে গাড়ি করে কাঠ সংগ্রহ চলছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ভাটায় আগুন দেওয়ার কথা জানান ইটভাটার দায়িত্বে থাকা ম্যানেজারবৃন্দ।
হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দাবন ও বেনারস এলাকায় নির্বিচারে সরকারি ও বেসরকারি বনের গাছ কাটা হচ্ছে। ঐ এলাকায় রয়েছে ১১ টি ইটভাটা। কয়েকটিতে কয়লা দিয়ে ইট পুড়ানো হয়। বাকি ইটভাটায় জ্বালানো হয় বনের কাঠ। অনেক ইটভাটার লাইসেন্স নেই। নেই পরিবেশের ছাড়পত্র। পরিবেশ দূষণে এ এলাকায় ফলজ গাছের ফলন হয় না। বনজ বাগান শীত মৌসুমে মরুভূমিতে পরিণত হয়।
রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। কোন ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে পারবে না। সরকারি নিয়ম মেনে ইটভাটা চালাতে হবে।’
কেকে/ এমএ