সংযুক্ত আরব আমিরাতে কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ‘জুলাইযোদ্ধা’ আব্দুল হামিদ।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ দেশে আসে। পরে বিকেল ৩টায় নিজ গ্রামের তাকওয়া মসজিদ মাঠে জানাজা শেষে উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর আবুধাবির আল-সদর কারাগারে বন্দি অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন।
আব্দুল হামিদ রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সামমাহালদার পাড়ার বাসিন্দা এবং আবদুস সালামের বড় ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আবুধাবিতে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে গত ২১ এপ্রিল আব্দুল হামিদকে গ্রেফতার করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর তিনি আল-সদর কারাগারে বন্দি ছিলেন। তবে তার মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে তার স্ত্রী কোহিনুর আক্তার।
হামিদের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার বলেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় হামিদ পরিবারের সঙ্গে মাত্র দুইবার যোগাযোগ করেছিলেন। এ বিষয়ে দুবাইয়ের আবুধাবি দূতাবাস থেকে কাগজ পত্রের জন্য পরিবারের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করেছিল।
তিনি আরও বলেন, কারাগারে থাকা অন্য বন্দিরাই প্রথমে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় আব্দুল হামিদের অসুস্থতার খবর দেন এবং পরে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে হামিদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানায়, দূতাবাস ইতোমধ্যে মৃতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং মৃতদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ করে।
হামিদের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার সকালে শোক প্রকাশ করে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ স্বাক্ষরিত একটি শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়। একই দিনে ইউএনও পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে যান।
জানাজার আগে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান— ইউএনও জিসান বিন মাজেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা, রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমাস ইউনুচ ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোক্তার আহমদ, জেলা বিএনপি নেতা মুহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মাস্টার, বিএনপি নেতা মুহাম্মদ জসিম, আবু তাহের, সাংবাদিক এস এম ইউসুফ উদ্দিনসহ অনেকে।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও ‘জুলাই যোদ্ধা’ আব্দুল হামিদের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
রাউজানের ইউএনও জিসান বিন মাজেদ বলেন, জুলাইযোদ্ধা আব্দুল হামিদের পারিবারের পাশে থাকবে সরকার ও উপজেলা প্রশাসান। প্রাথমিক ভাবে আমরা তাঁর লাশ দাফন কাপনের ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকার এককালীন সরকারী সহায়তা দেওয়া হবে তাঁর পরিবারকে। এছাড়া তাঁর ছেলে সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিবে উপজেলা প্রশাসন। সরকারী সিদ্ধান্তে তাঁর পরিবারকে আরও বিভিন্ন সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।
কেকে/ আরআই