রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় টালমাটাল ফান্সে আগামী দুই দিনের (৪৮ ঘণ্টা) মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দেবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এটি তাঁর প্রেসিডেন্সির সবচেয়ে গভীর রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) এই ঘোষণা আসে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নুর দুই দিনের জরুরি আলোচনা শেষে। লেকর্নু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দেশটির চলমান অচলাবস্থা নিরসনের জন্য। গত রবিবার তার ঘোষিত মন্ত্রিসভা কাঠামো দেশটির জোটসঙ্গী ও বিরোধী—উভয় পক্ষই প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এলিসি কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লেকর্নুর আলোচনায় অংশ নেওয়া দলগুলোর অধিকাংশই সংসদ ভেঙে আগাম নির্বাচনের বিপক্ষে মত দিয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী, বছরের শেষ নাগাদ বাজেট পাস করার মতো একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন।’ ম্যাক্রোঁ লেকর্নুর প্রচেষ্টার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলেও জানানো হয়।
এর আগে, অনিশ্চয়তা ছিল- ম্যাক্রোঁ কি লেকর্নুকে আবার নিয়োগ দেবেন, নাকি নতুন কাউকে বেছে নেবেন, কিংবা সংসদ ভেঙে আগাম নির্বাচন ডাকবেন- এমনকি নিজে পদত্যাগ করবেন কি না, সেটিও ছিল আলোচনার বিষয়।
ম্যাক্রোঁ গত সেপ্টেম্বর মাসে লেকর্নুকে- যিনি গত দুই বছরের মধ্যে তাঁর নিয়োগ দেওয়া পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী- নতুন সরকার গঠনের দায়িত্ব দেন। কারণ, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে সংসদ অনাস্থা ভোটে সরিয়ে দিয়েছিল। বাইরুর প্রস্তাবিত কৃচ্ছ্রনীতি বাজেটকে দায়ী করা হয় ক্রমবর্ধমান ঋণ সংকটের জন্য।
লেকর্নু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি বাইরুর নীতির বাইরে গিয়ে কাজ করবেন। কিন্তু গত রবিবার সন্ধ্যায় ঘোষিত তাঁর মন্ত্রিসভায় আগের সরকারের বেশ কয়েকজন বিতর্কিত মুখ থাকায় ডান ও বাম- দুই শিবিরই তীব্র সমালোচনা করে।
এর পরদিন লেকর্নু পদত্যাগ করেন। ফলে তার মাত্র ১৪ ঘণ্টার মেয়াদই আধুনিক ফরাসি ইতিহাসে সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী সরকার হিসেবে রেকর্ড গড়ে। তবে পরে তিনি ঘোষণা দেন, ম্যাক্রোঁর অনুরোধে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলগুলোর সঙ্গে আরও এক দফা আলোচনা করবেন।
এই ঘটনাপ্রবাহ ম্যাক্রোঁকে আরো একবার বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এদুয়ার ফিলিপসহ অনেকেই এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দাবি তুলেছেন।
কেকে/ এমএস