বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না : ধর্ম উপদেষ্টা      ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরও সাত, হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৭      ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প      দুদকের সব কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক সম্পত্তির হিসাব দিতে হবে      প্রাথমিক শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি      নির্বাচনী জোটের আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে : রাশেদ খান      গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনের বিকল্প নেই : আমান      
খোলা মত ও সম্পাদকীয়
শিক্ষার মান তলানিতে, এখনই দরকার সচেষ্ট হওয়া
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: রোববার, ৫ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:০৭ এএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

আজ ৫ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে শিক্ষক দিবস। শিক্ষকরা হলো জাতি গড়ার কারিগর। দক্ষ ও প্রতিশ্রুতিশীল শিক্ষক জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অথচ বাংলাদেশে বেশ কিছু কাল ধরে শিক্ষার মান ক্রমে নিচের দিকে নামছে। এই দায় শিক্ষা বিষয়ক নীতি নির্ধারকদের যেমন রয়েছে, তেমনি কিছুটা শিক্ষকদেরও রয়েছে। 

শিক্ষার্থীদের পাঠদক্ষতা, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান ও বাস্তব প্রয়োগ ক্ষমতায় বড় ধরনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অঙ্গনে বাংলাদেশের ডিগ্রির মান অবনমনেরও খবর আসছে। বিশ্বব্যাংকের চলতি বছরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শিক্ষার মান নিয়ে যা বলা হয়েছে তা উদ্বেগজনক। একটি শিশু ১৮ বছর বয়সে সাধারণত ১১ বছর মেয়াদি আনুষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পন্ন করে (প্রথম শ্রেণি থেকে একাদশ শ্রেণি)। কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের শেখার মান বিবেচনায় আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ৬.৫ বছরের সমতুল্য। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বাংলাদেশ সাড়ে চার বছর পিছিয়ে। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী পাঠ্যবই ঠিকভাবে পড়তে পারে না। 

১৭ বছর ধরে সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চললেও সৃজনশীল ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে তলানিতে। এমনকি দেশে বেকারদের মধ্যে ১৩ শতাংশই স্নাতক। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ২০২২ সালে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, শিক্ষার গুণগত মান কমে গেছে যে দেশগুলোতে তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত ও নাইজেরিয়া, বেড়েছে ভিয়েতনামে। 

শিক্ষাবিদদের মতে, শিক্ষক সংকট, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, প্রশিক্ষণের ঘাটতি, মানসম্মত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন না করা, শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতাসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিক্ষার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বিশেষ করে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ও দক্ষতাভিত্তিক পাঠদান প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাপক পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে একজন ঢাবি শিক্ষার্থী পড়তে গেলে তার একাডেমিক সার্টিফিকেটের ১০ মার্কে ০ দেওয়া হয়। এটির কারণ জানতে চাইলে সিঙ্গাপুরের জনশক্তি মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাজ্যের মান অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি স্নাতক সমমানের। আর বিশ্ববিদ্যালয়টির স্নাতক ডিগ্রি ফাউন্ডেশন কোর্সের সমমানের। এটি বিদেশে একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অবমাননাকর।  
 
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সূচকেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। ২০২২ সালে ইউএনডিপি এবং মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম নলেজ ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে ১৫৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২০তম। জাতিসংঘের সংস্থা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অরগানাইজেশনের প্রকাশিত ২০২১ সালের বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে ১৩২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৬ নম্বরে। উদ্ভাবন সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবার নিচে আছে বাংলাদেশ।

শিক্ষার মানের এই যে বেহাল দশা তা উত্তরণে আমাদের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই, নেই কোনো ভিশন, শিক্ষা নীতিরও কোনো বালাই নেই। কারিকুলামও না বুঝে-শুনে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এতে আমরা একবার সামনে যাই তো আরেকবার পেছনে যাই। শিক্ষাকার্যক্রমকে এখনো গণতান্ত্রিক করা যায়নি, সবার করে গড়ে তোলাও যায়নি। প্রায়ই নির্দিষ্ট একটি গ্রুপের অযৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাঠপুস্তকে আনা হচ্ছে পরিবর্তন। সব মিলিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার মান এসে তলানিতে ঠেকেছে। কিন্তু আমাদের পাশের দেশগুলো এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। ২০২২ সালের বৈশ্বিক সৃজনশীল ইনডেক্সে ১৩৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৯তম অবস্থানে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, কোরিয়া, শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটি দেশের শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশগুলো তাদের বর্তমান শিক্ষাক্রমে জোর দিচ্ছে বাণিজ্য (অর্থনীতি), বিজ্ঞান (জীববিজ্ঞান), কারিগরি শিক্ষা উন্নয়ন (টিইডি), কৃষি ও বাস্তব দক্ষতা উন্নয়নের মতো বিষয়গুলোতে। আমাদের সেই পথে হাঁটতে হবে, নয়তো পরিবর্তিত পৃথিবীতে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না, টেকসই উন্নয়নের যাত্রায় থাকব পিছিয়ে।

কেকে/ এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না : ধর্ম উপদেষ্টা
গাজীপুরে রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও অবকাঠামো সংকট, চরমে দুর্ভোগে বিয়ানীবাজারবাসী
আবুল সরকারকে মুক্তি দিলে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা মাদানীর

সর্বাধিক পঠিত

নাটোর-১ আসনে এবি পার্টির প্রার্থীর বিলবোর্ড ভাঙচুরের অভিযোগ
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প
পাটগ্রাম উপজেলায় সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারে 'চতুরবাড়ী বিওপি'র যাত্রা
থাইল্যান্ডে যাচ্ছে তরুণ উদ্ভাবক দল সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিকস ক্লাব
ইয়ুথ ফোরামের নবনির্বাচিত কমিটিকে ব্যারিস্টার খোকনের বরণ

খোলা মত ও সম্পাদকীয়- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close