২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়াও মাঠে নামানো হয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের। ৩ সপ্তাহের আন্দোলনে শহীদ হন প্রায় সাড়ে ১৪০০ ছাত্র-জনতা। আহত হন প্রায় ২৫ হাজার।
আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১’-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে দেশের অন্তত ৪৩টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়। আন্দোলন দমনে ৫০টির বেশি জেলায় ব্যবহার করা হয় মারণাস্ত্র।’
মামলার ৫৪তম ও সর্বশেষ সাক্ষী আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন ও আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে হত্যা, গুম, খুন ও নির্যাতনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতায় টিকে থাকা।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণ সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বিটিভি ও ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজে। দেখানো হয় পুলিশের নৃশংসতা ও বর্বরতার তথ্যচিত্র।’
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর। তিনি এ মামলার সর্বশেষ সাক্ষী।
এদিকে, জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে। সাক্ষী অসুস্থ থাকায় পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী সোমবার (৬ অক্টোবর)।
বলে রাখা ভাল, গেল ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গেল ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।
কেকে/ এমএ