পাকিস্তানকে হারাও আর ফাইনালে খেল– এমন সমীকরণ আজ দুটো খেলায় ছিল বাংলাদেশের সামনে। ফুটবলে অ-১৭ সাফে আর ক্রিকেটে এশিয়া কাপে। ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফুটবলে লক্ষ্যটা পূরণ হলেও ক্রিকেটের বেলায় আশা পূরণ হলো না। ১১ রানে হেরে এশিয়া কাপের স্বপ্ন ভেঙে গেল লিটন দাসদের।
অথচ ম্যাচের সমীকরণটা ছিল বেশ সহজ। ২০১৬ এশিয়া কাপের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে হলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মোটে ১৩৬ রান। এর চেয়ে ঢের বেশি রান এই এশিয়া কাপে এই মাঠেই তাড়া করেছে দল, সেটার সপ্তাহও পেরোয়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৯ রান তাড়া করে পাওয়া ওই জয়ই বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখার সাহসটা দিয়েছিল। তবে এবার ১৩৬ রান তাড়া করতে না পারার গ্লানি সে স্বপ্নটা ভেঙে দিল দলের।
ম্যাচের শুরুটা যেভাবে করেছিল বাংলাদেশ, এর চেয়ে ভালো কিছুই চাইতে পারত না। ৫ রান তুলতেই ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদরা। দুই ব্যাটার সাজঘরে ফিরেছিলেন শুরুতেই। এরপর ছোট ছোট শুরু পাচ্ছিলেন ফখর জামান, সালমান আলী আগারা, তবে তা বড় কিছুতে রূপ দিতে পারছিলেন না। বলা ভালো বাংলাদেশ বোলাররা তাদের তা করতে দেয়নি।
পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে সালমান যখন ফিরলেন দলীয় ৫০ পূরণের আগে, তখন মনে হচ্ছিল পাকিস্তান বুঝি দুই অঙ্কেই গুটিয়ে গেল! তবে মোহাম্মদ হারিসের ২৩ বলে ৩১ আর শাহিন আফ্রিদির ১৩ বলে ১৯ রানের ইনিংসে সে শঙ্কা দূর হয়। এরপর মোহাম্মদ নওয়াজের ১৫ বলে ২৫ আর ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংসে ভর করে ৮ উইকেট খোয়ানো পাকিস্তান পেয়ে যায় ১৩৫ রানের লড়াকু পুঁজি।
জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশ ছিল চাপে। ইনিংসের পঞ্চম বলেই শাহিন শাহ আফ্রিদির বাউন্সারে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে মোহাম্মদ নেওয়াজের দুর্দান্ত ক্যাচে পারভেজ হোসেন ফেরেন শূন্য রানে। এরপর তাওহিদ হৃদয় ১০ বলে ৫ রান করে আফ্রিদির শিকারে পরিণত হন। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের আশা ভরসার বাতিঘর হয়ে থাকা সাইফ হাসান যখন ফিরলেন ১৫ বলে ১৮ রান করে হারিস রউফের বলে সাইম আইয়ুবের হাতে ক্যাচ দিয়ে, তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
এরপর মেহেদী হাসান ১০ বলে ১১ রান করে নেওয়াজের বলে হুসেইন তালাতকে ক্যাচ দেন। নুরুল হাসান ২১ বলে ১৬ রান করে সাইম আইয়ুবের বলে লং অফে নেওয়াজের হাতে ধরা পড়েন। অধিনায়ক জাকের আলী ৯ বলে ৫ রান করে মোহাম্মদ নেওয়াজের বলে লং অফে আউট হন।
শেষ দিকে শামীম হোসেন, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ ও রিশাদ হোসেন চেষ্টা করলেও জয়ের দেখা মেলেনি। ১৮তম ওভারে ৯৭ রানে ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর তাসকিন চার মেরেই রউফের পরের বলেই বোল্ড হন।
শেষ ওভারে দরকার ছিল ২৩ রান। হারিস রউফের করা ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন চেষ্টা করলেও পারেননি। প্রথম বলে লেগ বাইয়ে আসে ১ রান। দ্বিতীয় বলে রিশাদ মারেন চার। তৃতীয় বলে ডট। চতুর্থ বলে রিশাদের ছক্কায় কিছু আশা জাগলেও বাকি দুই বল ডট হয়ে যায়।ফলে বাংলাদেশ ম্যাচটা হারে ১১ রানে। এশিয়া কাপ থেকেও বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় তাদের।
কেকে/ আরআই