‘মহালয়া আয়োজনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। মহালয়া হলো গভীর আবেগগত ও আধ্যাত্মিক সংযোগের একটি মুহূর্ত, ঐতিহ্যের উদযাপন এবং মন্দের উপর ভালোর জয়ের স্মারক, যার জন্য তারা বছরের পর বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। এই ‘চণ্ডী’তেই রয়েছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা ও দেবীর প্রশস্তি। মহালয়া হলো পিতৃপক্ষ ও দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ- এর মাধ্যমে দুর্গাপূজা উৎসবের সূচনা হয়। দেবী দুর্গা এই দিন পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী সনাতন ধর্মালম্বীদের সংগঠন প্রবাসী সনাতনী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে শুভ মহালয়া অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকেই প্রবাসী সনাতনী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আমিরাতের আজমান প্রদেশে মহালয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
উত্তম কুমার সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অজিত কুমার রায়৷ সনাতনী প্রবাসী বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণে দুই পর্বের অনুষ্ঠানে সংগঠনের লগো উন্মোচন, মেগাজিন প্রকাশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন আয়োজনে করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা রঞ্জন মজুমদার, বিশ্বনাথ দে, অসীম কুমার ভট্টাচার্জ, প্রদীপ কুমার রায় চৌধুরী, দিনোবন্ধু তালুকদার, রাজু চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাবু অদুল কান্তি চৌধুরী, অনিতা চৌধুরী, বাবু মৃনাল কান্তি চৌধুরী প্রমুখ।
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন স্বর্ণালী ঘোষ। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মিতা হায়িত এবং সঞ্চিতা রায়। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন শিমুল দেবনাথ। চন্ডীপাঠে ছিলেন শুভ ব্যানার্জি ।
সংগীত পরিবেশনায় ছিলেন সুমনা দাশ, স্নিগ্ধা সরকার তিথি, মিতা সাহা, পাপড়ি মল্লিক, রুমকি সরকার, অনামিকা সাহা, কলি মজুমদার, বীথি সেন, প্রমীলা সেন, পূজা এইচ, দ্বীপ দেবনাথ, শিপন কর্মকার, সঞ্জয় সরকার , রিংকু সরকার ও শিবলু দাশ। যন্ত্র সংগীতে ছিলেন বাবু অজিত রায়, শিমুল দেবনাথ, বাপ্পারাজ নাথ ও ওম সরকার।
বক্তারা বলেন, ‘মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুরাণে আছে দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব- ‘মহালয়া’, ‘বোধন’ আর ‘সন্ধিপূজা’। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনও মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়। তাই, ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে সিংহবাহিনী নিয়ে দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।’
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মূলত আজ থেকেই দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শোনা যাবে। দুর্গাপূজার এই সূচনার দিনটি আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হবে। মহালয়া উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
প্রবাসী সনাতনী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আমিরাতের আজমান প্রদেশে চণ্ডীপাঠ, চন্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হবে।
কেকে/ এমএ