পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার জালালের ঢাল গ্রামের কৃষক আবদুল হান্নানে চাষকৃত বারি-৮ জাতের টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছেন। তার টমেটো খেত পরির্দশন করেছেন আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা মোতমাইন্না।
আবদুল হান্নান মাত্র এক বিঘা জমিতে এই বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন। তাকে দেখে এলাকার অনেকেই বারি-৮ জাতের টমেটো চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টমেটো চাষে কৃষক হান্নান মালচিং পেপার ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। খেতে জৈব বালাইনাশক দেওয়া হয়েছে। এতে বিষমুক্ত টমেটো উৎপাদন হয়।
খেত থেকে টমেটো সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ১৬০-১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। পাইকাররা এসব টমেটো প্রতি কেজি বাজারে বিক্রি করেন ১৯০-২০০ টাকা পর্যন্ত।
কৃষক হান্নান বলেন, ‘উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল হকের পরামর্শে তিনি প্রায় ১ বিঘা জমিতে টমেটো জাত বারি-৮ আবাদ করে সফলতা পাই। আরও কিছু দিন গেলে আরও বেশি পরিমাণ আয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই, আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এ জাতের টমেটো চাষ করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।’
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল হক বলেন, ‘লাভজনক পদ্ধতিতে টমেটো উৎপাদন বৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় মোটিভেশনের মাধ্যমে মালচিং পেপার দিয়ে বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ করে কৃষক হান্নান লাভবান স্বপ্ন দেখছেন।’
তিনি বলেন, ‘বারি-৮ নামে নতুন জাতের টমেটো চাষে ইতোমধ্যে ব্যাপক ফলনও পেয়েছেন তিনি। ভালো দাম পাওয়ায় ভাগ্য বদলাচ্ছে এই কৃষকের।’
বারি-৮ টমেটো খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। ফলে তারা দামও পাচ্ছেন ভালো। কৃষকরা বলছেন, ‘অধিক ফলন আসায় এ টমেটো চাষ করে লাভবান হচ্ছেন অনেকেই।’
তাই আগামীতে আরো বেশি জমিতে চাষের পরিকল্পনা করছেন তারা। কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় প্রতিটি গাছেই প্রচুর পরিমাণ টমেটোর ফলন এসেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. মান্নান হোসেন বলেন, ‘অন্যান্য টমেটোর গড় ওজন ৩০-৩৫ গ্রাম ওজন হলেও নতুন এ জাতের টমেটোর গড় ওজন ৫০ গ্রামেরও বেশি। এছাড়া চারা লাগানোর মাত্র ৬০ দিনের মধ্যেই ফল পাকতে শুরু করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বারি-৮ টমেটোর ফলন অন্যান্য জাতের চেয়ে ফলন প্রায় দ্বিগুন। প্রতিটি গাছে ৩০-৪০টি ফল ধরে এবং গাছপ্রতি ফলন হয় প্রায় ১৫ কেজি।’
মাহমুদা মোতমাইন্না বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় পরীক্ষামূলক বারি-৮ জাতের টমেটো ১ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৭-৮ টন বারি-৮ জাতের টমেটো উৎপাদন হয়। কৃষকদের এ টমেটো চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, সার, কীটনাশক ও হরমোন দেওয়া হয়। কৃষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ টমেটো চাষে দক্ষ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য জাতের চেয়ে এ টমেটোর আকার বড় ও কালার হওয়ায় তারা বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন।’
‘আবহাওয়ার সাথে শতভাগ সামঞ্জস্য এ নতুন জাতের টমেটো চাষে আগামীতে কৃষিতে বিপ্লব সৃষ্টি করবে।’
কেকে/ এমএ