জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একটি প্রতিবেদন নিশ্চিত করেছে, গাজা শহর এবং এর আশেপাশের এলাকা এখন দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়েছে। বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা ও অপুষ্টির মাত্রা শনাক্ত করতে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো 'ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)' ব্যবহার করে। গাজার বর্তমান পরিস্থিতিকে আইপিসির প্রতিবেদন ফেজ ৫-এ উন্নীত করেছে। ফেজ ৫ হলো দুর্ভিক্ষের সর্বোচ্চ ও সবচেয়ে ভয়াবহ মাত্রা।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।
এতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষ ও মৃত্যুর মতো বিপর্যয়কর অবস্থার মুখোমুখি। ইসরায়েল এখনো গাজায় সহায়তা প্রবেশে কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করছে। দেশটি গাজায় দুর্ভিক্ষের কথা অস্বীকার করে বলেছে, আইপিসির প্রতিবেদনটি হামাসের মিথ্যাচারের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
আইপিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় তীব্র খাদ্য সংকট ও অপুষ্টিজনিত অবস্থার বিশ্লেষণ শুরুর পর থেকে এটি পরিস্থিতির সবচেয়ে ভয়াবহ অবনতি নির্দেশ করে এবং মধ্যপ্রাচ্যে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ অবস্থা নিশ্চিত হলো।
যদিও আইপিসি সরাসরি দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করতে পারে না। সাধারণত দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সরকার বা জাতিসংঘের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। তবে আইপিসি-এর এই নতুন শ্রেণিবিন্যাস জাতিসংঘকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার দিকে ধাবিত করতে পারে।
আইপিসির প্রতিবেদনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্য আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দুর্ভিক্ষ দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিস পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
এই সময়ের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ আইপিসি ফেজ ৫ পর্যায়ের বিপর্যয়কর অবস্থায় থাকবে। অর্থাৎ প্রায় ৬ লাখ ৪১ হাজার মানুষ এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। এদিকে ফেজ ৪ পর্যায়ে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১১ লাখ ৪০ হাজারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাদের এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন ইসরায়েল গাজা সিটি দখল করতে নতুন সামরিক অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গাজার অধিকাংশ মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
৯০ শতাংশের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়া অন্তত ৬২ হাজার ১২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
কেকে/এআর