বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫,
১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: বৃহস্পতিবারের উল্লেখযোগ্য সাত সংবাদ      ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’      নির্বাচনে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী : ইসি সচিব      ৪৫তম বিসিএস নন-ক্যাডারের ফল প্রকাশ, সুপারিশ পেলেন ৫৪৫ জন      বন বিভাগে সুফল প্রকল্পে দুর্নীতি, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার দাম্ভিকতা      ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হলে কৃষি অর্থনীতি টেকসই হবে : কৃষি সচিব      ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না : ধর্ম উপদেষ্টা      
দেশজুড়ে
স্বপ্নের সৌদি, বাস্তবে দুঃস্বপ্ন, ভাইকে ফেরাতে ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
হারিছ আহমেদ, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশ: সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫, ৪:০৮ পিএম আপডেট: ০৪.০৮.২০২৫ ৪:১২ পিএম
ছবি : প্রতিনিধি

ছবি : প্রতিনিধি

স্বপ্ন ছিল ঘরে সুখ ফিরবে। সন্তানরা হাসবে, মা পরম শান্তিতে থাকবেন। সেই স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিলেন কিশোরগঞ্জের মুজিবুর রহমান। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আজ তার পরিবার প্রতিদিন কান্নায় ভেঙে পড়ে, কারণ মুজিবুর বন্দি প্রবাসের জালে। আর তাকে দেশে ফেরাতে চাওয়া হচ্ছে ৭ লাখভ টাকা মুক্তিপণ।

মুজিবুর ছিলেন ঢাকার মিরপুরে এক জুতার কারখানার মালিক। সংসার চলছিল ভালোই, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ছোট্ট হলেও সুখের ঘর ছিল। হঠাৎই পরিচয় হয় একই উপজেলার লতিফাবাদ ইউনিয়নের আল-আমীনের সঙ্গে। আল-আমীন স্বপ্ন দেখান ‘ভালো ভিসা, ভালো কাজ, খালার রেফারেন্সে সৌদি আরব পাঠানো হবে।’

পরিবারের সুখের আশায় সব ছেড়ে সৌদি পাড়ি জমান মুজিবুর। কিন্তু বাস্তবে সেখানে পৌঁছে তার জীবনে নেমে আসে নিদারুণ দুর্ভোগ। কাজ নেই, খাদ্য নেই, থাকার জায়গাও অনিশ্চিত। দিনের পর দিন কষ্টে, ক্ষুধায় দিন কাটছে মুজিবুরের।

আরেক ভুক্তভোগী প্রবাসী দুর্জয়ের অভিজ্ঞতাও কম ভয়াবহ নয়। জমি বিক্রি করে মুজিবুরের মতো তাকেও বিদেশে পাঠানো হয়। তিনিও সেই একই দালাল চক্রের শিকার। সৌদিতে যাওয়ার পর কোনো কাজ না পেয়ে দিনের পর দিন অনাহারে থেকেছেন। দেশে ফেরার জন্য তাকেও দিতে হয়েছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ। তার কণ্ঠে অসহায়ের আর্তি ‘মানুষ বিদেশে গিয়ে টাকা পাঠায়, আর আমি টাকা দিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ দিয়ে দেশে ফিরছি। আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে আল-আমীন।’

মুজিবুরের মা অনুফা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘চারটা ঈদ গেছে, আমার নাতিরে একটা জামাও কিনে দিতে পারি নাই। ওরা বাবারে খুঁজে, আমিও খালি কান্দি।’

মুজিবুরের ছোট ভাই আবু হানিফ বলেন, ‘টানাটুনির সংসার, ধারদেনা আর জমি বিক্রি করে ভাইরে পাঠাইছিলাম বিদেশে। আজ তাকাইতে পারি না ভাইয়ের চোখে। আল-আমীনরে কতবার বলছি, পায়ে ধরছি তাও সে পাত্তা দেয় না।"

স্ত্রী লিমা আক্তার বলেন, আল-আমীনের খালার কাছে থাকা অবস্থায় টাকা না পাঠালে তাকে করা হয় মারধর ও মানসিক নির্যাতন। আমার টাকা পয়সার দরকার নাই আমার মানুষটা দরকার তিনটা ছেলে মেয়ে তাদের বাবাকে যেন বাবা ডাকতে পারে আমি সেটাই চাই, একই দালালের মাধ্যমে প্রবাসে পাঠানো আরো কয়েকজন ভুক্তভোগী আছেন, যারা ফিরেছেন মুক্তিপণ দিয়ে।

সৌদি থেকে সদ্য ফিরে আসা দুর্জয় জানান, ‘ভিসার মেয়াদ শেষ হলে আকামা না দিয়ে ফেলে রাখা হয়। পরে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। মাসের পর মাস জেলে থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার সুযোগ আসে তাও মুক্তিপণ দিয়েই।’

অভিযুক্ত আল-আমীন নিজের দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, আমার মাধ্যমে মুজিবুর ভাইকে পাঠাইছি। কিন্তু খালা আমার সঙ্গে বেইমানি করছে। যদি আমি অপরাধী হই, আমার শাস্তি হওয়া উচিত। এখন দেশে আসতে চাইলে মুক্তিপণ দিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশের হাজারো পরিবার এমন প্রবাসী প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতি অনুরোধ এ ঘটনায় দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। মুজিবুর ও তার মতো হাজারো মায়ের কান্না যেন আর না শোনা যায়।

কেকে/এএস

মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

বৃহস্পতিবারের উল্লেখযোগ্য সাত সংবাদ
তরুণ, যুব ও মেধাবী ছাত্র সমাজকে রক্ষায় সুস্থ সংস্কৃতি জরুরি: রায়হান সিরাজী
৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’
চালাক ছাত্রী

সর্বাধিক পঠিত

নাগেশ্বরীতে ১০ টাকার স্বাস্থ্য সেবা চালু
চাঁদপুর-২ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা রয়েছে: তানভীর হুদা
দুই ট্রলারসহ সেন্টমার্টিনে ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
গাজীপুরে রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
এশিয়ান টাউনস্কেপ অ্যাওয়ার্ডসে সম্মাননা পেল রাজউক

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close