শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫,
১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি      শেখ হাসিনার ফেরার পরিকল্পনা বানচাল      ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক      বাংলাদেশকে আলাদা কোনো শর্ত দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র : প্রেস সচিব      ‘হেফাজতের সাথে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নাই’      মার্কিন শুল্ক সন্তোষজনক, তবে পুরো বিষয়টা খোলাসা করা উচিত : খসরু      ২০ শতাংশ শুল্কে অন্তর্বতী সরকারের অন্যতম সফলতা: আইন উপদেষ্টা      
দেশজুড়ে
কেশবপুরে পানিবন্দি ২ হাজার পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন
সিদ্দিকুর রহমান, কেশবপুর (যশোর)
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ৬:৪১ পিএম
ছবি : প্রতিনিধি

ছবি : প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুর পৌরসভাসহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদীর নাব্যতা না থাকা, অপরিকল্পিত মাছের ঘেরের কারণেই সামান্য বৃষ্টিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। 

উপজেলার অধিকাংশ নদী ও খালের কচুরিপানা অপসারণ না করায় পানি নিষ্কাশনের পথ একবারে বন্ধ হয়ে হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদীর উপচে পড়া পানিতে তলিয়ে গেছে পৌর এলাকাসহ উপজেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। প্রায় এক মাস পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ২‘হাজার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শতাধিক পানিবন্দি মানুষ বসত বাড়ি ছেড়ে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের দুই পাশে আশ্রয় নিয়েছেন। 

এছাড়া তলিয়ে গেছে কেশবপুর পাইকারি কাঁচা বাজার, ধান হাট, হলুদ হাটসহ প্রধান প্রধান সড়ক। অপরদিকে, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের ফসলের  ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  

জানা গেছে, কেশবপুর শহরসহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকার বর্ষার অতিরিক্ত পানি হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদী দিয়ে আপারভদ্রা নদীতে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। এ তিনটি নদী পলিতে ভরাট হওয়ার কারণে গত বছর ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় কেশবপুর বাসীকে। এছাড়া কেশবপুর শহরের আশপাশের নিম্নাঞ্চলের ৪ শতাধিক অপরিকল্পিত মাছের ঘের করার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কেশবপুর পৌরসভার আলতাপোল, মধ্যকুল, ভবানিপুর, সাহাপাড়া ও হাবাসপোল গ্রাম, সদর ইউনিয়নের মধ্যকুল, আলতাপোল, সুজাপুর, ব্যাসডাঙ্গা ও রামচন্দ্রপুর গ্রাম, মঙ্গলকোট ইউনিয়নের কর্ন্দোপপুর ও বড়েঙ্গা গ্রাম পানিতে তলিয়ে গিয়ে শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সরেজমিন পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের আলতাপোল বিশ্বাস পাড়া, গাজি পাড়া, ঋষি পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গাজি পাড়ার  চা বিক্রেতা মাহাবুর রহমানের উঠান প্রায় ৩ ফুট পানিতে থই থই করছে। তিনি বলেন, গত প্রায় এক মাস ধরে তার পরিবারসহ ওই এলাকার ২০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে বাড়ি ছেড়ে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে আশ্রয় নিয়েছেন।

যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে তালতলা নামক স্থানে আশ্রয় নেওয়া আলতাপোল গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, তারা প্রায় একমাস ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। বসত ঘরের ভেতর পানি ওঠায় বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। এ কারণে বর্তমান মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।

পৌর এলাকার সরফাবাদ গ্রামের কয়েকজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অপরিকল্পিত মাছের ঘের করা ও বড়পীঠ খালের কচুরিপানা অপসারন না করার কারণে পানি নিষ্কাশনের বন্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টিতে তাদের বাড়ি ও ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।

পাইকারি কাচা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, নদী খনন না করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা প্রতি বছর সরকারি বরাদ্ধ অর্থের সিংহভাগ লুটপাট করে থাকেন। এ কারনে  হরিহর নদীর উপচে পড়া পানিতে কাচা বাজার তলিয়ে গেছে। এর ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি এ বাজারে আনতে পারছে না। বাধ্য হয়ে এ বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মাইকেল মোড়ে নিয়ে গেছে ।

কেশবপুর পৌর এলাকার মাহবুবুর রহমান  বলেন, পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে আলতাপোল দেড় শতাধিক পরিবার প্রায় একমাস পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কেশবপুরের প্রধান নদী হরিহর পলিতে ভরাট ও বড়পীঠ খাল কচুরিপানা ভরে যাওয়ার করণে পানি নিষ্কাশিত হতে পারছে না। এ কারনে পানি বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের বাড়ি ঘরে উঠেছে। তার এলাকার দেড় শতাধিক পরিবার প্রায় একমাস পানিতে আটকা থাকলেও পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। পানিবন্দিদের মধ্যে অনেকে সড়কের পাশে আশ্রয় নিয়েছে। এ কারণে পানিবন্দি মানুষের মাঝে তীব্র অসন্তোাষ বিরাজ করছে।

উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা বলেন, তার ইউনিয়নের আলতাপোল, মধ্যকুল, সুজাপুর, ব্যাসডাঙ্গা ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।  

কেশবপুর পৌরসভার সচিব এনামুল হক বলেন, হরিহর নদীর উপচে পড়া পানি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে ১৫শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।  
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল্ মামুন বলেন, চলতি মাসের বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, মঙ্গলকোট তিন নদীর মোহনা থেকে আপার ভদ্রার ৩কি. ৭৫০ মিটার নদৗ খনন কাজ চলমান রয়েয়ে। যা প্রায় শেষ পর্যায়ে। খনন কাজ শেষ হলে পানি দ্রুত নিষ্কাশিত হবে।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  বন্যা   পানিবন্দি   মানবেতর জীবনযাপন  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি
শেখ হাসিনার ফেরার পরিকল্পনা বানচাল
‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক
বড়লেখা ২০ফুট লম্বা অজগরকে পিটিয়ে হত্যা
যোগদানের ২২ দিনের মাথায় শিবচর থানার ওসি প্রত্যাহার

সর্বাধিক পঠিত

‘হেফাজতের সাথে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নাই’
সুলতানগঞ্জকে যদি বন্দর করা যায় তাহলে করা হবে: ড. এম সাখাওয়াত
নওগাঁয় চক্ষু হাসপাতালের উদ্বোধন
লালপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, শাশুড়ি আটক
‘শুধু নির্বাচনের জন্য জুলাই অভ্যুত্থান হয়নি’

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close