চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ ফকিরাচাঁন-মাদার্শাবাড়ি সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। কোথাও কোথাও রাস্তার অস্তিত্বই মুছে গেছে। বর্ষা মৌসুমে কাঁদা-পানিতে তলিয়ে গিয়ে চলাচল একেবারেই দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। তবুও ঝুঁকি নিয়েই চলছে অটোরিকশা, সিএনজি, এমনকি পণ্যবাহী গাড়িও। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে এই দুর্ভোগ সহ্য করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে জনদুর্ভোগের মাত্রা দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাইন্দং ইউনিয়নের ফকিরাচাঁন এলাকায় সড়কের বেহাল অবস্থা চরমে পৌঁছেছে। ২ বছর পূর্বে আঁধায়েরঠেক থেকে ভূঁইয়াবাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি অংশ এইচবিবি দ্বারা উন্নয়ন করা হলেও সড়কের বাকি অংশজুড়ে বিরাজ করছে চরম দুর্দশা। বিভিন্ন স্থানে সড়কের মাটি ও ইট উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। কিছু কিছু জায়গায় সড়কের চিহ্নটুকুও আর অবশিষ্ট নেই। বর্ষা মৌসুমে গর্তগুলো পানি জমে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। সড়কের পাশে কোথাও কোথাও গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে সামান্য অসাবধানতাই বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। পথচারী ও যানবাহন চালকদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে সিএনজি অটোরিকশা, এমনকি পণ্যবাহী গাড়িগুলোও হেলে দুলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
পথচারী শামশুল আলম বলেন, "এই রাস্তা দিয়ে হাঁটাও এখন দুরূহ হয়ে পড়েছে। স্কুল, মাদ্রাসার শিশুদের কাঁদা মাড়িয়ে যেতে হয়। বালু ও ইটের গাড়ির কারণে হাঁটার জায়গাটুকুও থাকছে না। প্রতিদিনই আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।"
স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস চৌধুরী বলেন, "ফকিরাচাঁন সড়কের বেহাল অবস্থায় আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। সারাদেশে উন্নয়ন হলেও এ সড়কে কোনো কাজ হয়নি। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।"
স্থানীয় দোকানদার রিপন আলী বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে ফকিরাচাঁন সড়কটি মেরামত না হওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে আছে। জানি না, এই কষ্ট আর দুর্ভোগ কবে নাগাদ শেষ হবে।"
পাইন্দং ইউপি চেয়ারম্যান একেএম সরোয়ার হোসেন স্বপন বলেন, "ফকিরাচাঁন সড়কটি নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এবং এলজিইডিতে তদবির চলছে। তিনি জানান, পুরো সড়ক এলজিইডির আওতায় না থাকলেও তাজুর ঘাটা থেকে হালদার পাড় পর্যন্ত অংশটি এলজিইডির আইডিভুক্ত। তবে হালদার পাড় পর্যন্ত কিছু অংশ এখনো আইডির বাইরে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে।"
ফটিকছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, "ফকিরাচাঁন সড়কের উন্নয়নে আমরা ইতোমধ্যে জরিপ ও প্রস্তাব পাঠিয়েছি। সড়কটির একটি অংশ এলজিইডির আইডিভুক্ত হলেও কিছু অংশ এখনো আইডির বাইরে রয়েছে। আইডি অন্তর্ভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।"
কেকে/এআর