আশুলিয়ায় চাড়ালপাড়া এলাকায় মিতা খাতুন (২০) নামের স্ত্রীর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে বাড়ি পাঠানোর সময় হত্যাকারী সন্দেহে স্বামী মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। পরে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টার সময় আশুলিয়ার দক্ষিণ বাইপাইল চাড়ালপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃত স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক (৩০) নাটোর জেলার সদর থানার চাঁনপুর এলাকার মোখলেছুর রহমানের ছেলে। সে আশুলিয়ার চারালপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে স্যানেটারি মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। নিহত মিতা খাতুন নাটোরের বাগাতিপাড়া থানার মিশ্রিপাড়া এলাকার মানিক প্রামাণিকের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের সময়ের দিকে মোস্তাফিজ তার স্ত্রীর লাশ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে সে চলে যায়। পরে লাশের সঙ্গে নিকটতম কোনো আত্মীয়স্বজন না থাকায় ড্রাইভার লাশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে স্থানীয়রা নিহতের স্বামীকে খুঁজে এনে লাশের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে যেতে বলেন। এ সময় সে নিজেও যেতে পারবে না বলে জানায়। পরে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার শামীম মিয়া বলেন, আমাকে ফোন করে নিয়ে আসে লাশ নিয়ে নাটোর যাবে বলে। পরে তারা লাশ উঠিয়ে আমাকে নিয়ে যেতে বলে। এ সময় আমি জানতে চাই, লাশের সঙ্গে কে যাবে? সে জানায়, মেয়ের আত্মীয়রা সামনে আছে, তারা যাবে। পরে আমি বলি, এই লাশ নিয়ে আমি একা যেতে পারব না। পরে আমি তাকে সঙ্গে যেতে বলি। সে যেতে পারবে না বললে স্থানীয়রা তাকে আটক করে।
নিহতের পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া আজিজ মিয়া বলেন, সকালে মোস্তাফিজ তার সহকারীদের নিয়ে বাসায় আসে যন্ত্রপাতি নেওয়ার জন্য। এ সময় বাসার দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল। পরে কিছু সময় সে অপেক্ষা করে। তাতেও রুম না খোলায় সে আমার রুমের ভিতর দিয়ে বাঁশের মাচাইল উঁচু করে নিজের রুমে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মাচাইল উঁচু করে সে চিৎকার দিলে তার সহকারীরা এগিয়ে আসে। পরে ভিতর থেকে দরজার ছিটকানি খুলে দিলে তার সহকারীরা ভিতরে গিয়ে মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে নামায়। পরে সে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লাশ বাড়ি পাঠানোর চেষ্টা করেন।
পুলিশ জানায়, দুপুরে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে আশুলিয়ার দক্ষিণ বাইপাইল এলাকা থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় স্থানীয়রা নিহতের স্বামী মোস্তাফিজকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে তাকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল তালুকদার বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
কেকে/এএস