কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় ব্যবসায়ী সৈয়দ আলী হত্যা মামলায় একই পরিবারের ৯ জনসহ মোট ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমিন বিপ্লব জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন আব্দুর রউফ ওরফে আলফাতুন (৬৯) এবং তার দুই ছেলে আঙ্গুর মিয়া ওরফে আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও হায়দার আলী (৩৭) আজিজুল হক এলাম (৫৪) এবং তার দুই ছেলে রেজা মিয়া ওরফে আশিক আহমেদ হৃদয় (৩৪) ও রিয়াদ (৩২) আলাউদ্দিন ওরফে আলাম মেম্বার (৫৯) এবং তার দুই ছেলে রোয়েল (৩৯) ও রাসেল ওরফে ছোটন (৩৬) আরও রয়েছেন কালাম মুন্সি (৬৪), আয়তুল হক মালাম (৫২), সোহেল (৪১) এবং জহিরুল ইসলাম কালা (৪৪)।
রায় ঘোষণার সময় আলফাতুন, আজিজুল হক, আয়তুল হক, রিয়াদ, আশিক আহমেদ হৃদয়, জহিরুল ইসলাম ও সোহেল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ৬ জন ছিলেন পলাতক।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জায়গা-সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ করিমগঞ্জের নিয়ামতপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যবসায়ী সৈয়দ আলী (৩০)-এর ওপর সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালায় আসামিরা। লাঠি, রড, কিরিচ, ছুরি দিয়ে আঘাত করে তাকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তাকে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং অবস্থা সংকটাপন্ন হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ২৯ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে, ২৫ মার্চ সৈয়দ আলী নিজে গুরুতর আহত অবস্থায় তার বড় বোন পারভীন সুলতানার মাধ্যমে করিমগঞ্জ থানায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। পরে সৈয়দ আলীর মৃত্যু হলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর করিমগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক শহর আলী ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার এই রায় দেন আদালত।
সরকারি পক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট অশোক সরকার।
নিহত সৈয়দ আলী ও দণ্ডিত আসামিরা সবাই করিমগঞ্জ উপজেলার দেওপুর (কজলাহাটি) গ্রামের বাসিন্দা।
কেকে/ এমএস