হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সিংহগ্রামের চিনি মিয়ার ছেলে কনু মিয়া। কারাভোগ করেছেন দীর্ঘ ৩০ বছর ২ মাস ১৯ দিন। অথচ মামলার বিচার হয়নি, হয়নি সাজাও।  অবশেষে হবিগঞ্জ জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের উদ্যোগে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। 

মঙ্গলবার (১৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

দিনটি ১৯৯৫ সালের ২৫ মে। তখন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কনু মিয়া, ঘুমন্ত অবস্থায় তার মা মেজেস্টর বিবিকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় গ্রামবাসী তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরদিন কনু মিয়া একটি সংক্ষিপ্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর শুরু হয় তার দীর্ঘ কারাবাস। প্রথম দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে কারাগারে গেলেও ধীরে ধীরে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। অনেকেই ভুলেই যান কনু মিয়া বেঁচে আছেন।

৩০ বছর পর হবিগঞ্জের জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন বিষয়টি জানার পর কনু মিয়ার আইনগত প্রতিকার নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেন। খুঁজে বের করেন মামলার বাদী মনু মিয়াকে এবং তার ভাই নাসু মিয়াকেও লিগ্যাল এইড অফিসে নিয়ে আসেন। সরকারি উদ্যোগে কনু মিয়ার জামিনের বিষয়ে জেনে আবেগে আপ্লুত হন মনু ও নাসু মিয়া। তারা প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

লিগ্যাল এইডের প্যানেলভুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ আজ সাংবাদিকদের বলেন, মানসিক রোগে আক্রান্ত আসামির জামিন একটি স্পর্শকাতর বিষয়। বিশেষ করে তিনি হত্যা মামলার একমাত্র আসামি। কনু মিয়ার বিচারিক কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে বলে জানা যায়। 

তিনি জানান, সব দিক বিবেচনায় নিয়ে সোমবার (১৪ জুলাই) হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কনু মিয়ার জামিন আবেদন করেন আইনজীবী। জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম সেই জামিন মঞ্জুর করেন। পরে আজ বেলা ১১টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

কেকে/এএস