বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫,
৬ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: গ্যাস সংকটে ঝুঁকিতে বিনিয়োগ-রফতানি      মনোনয়নপত্র জমাদানে উৎসবমুখর পরিবেশ      ভারতে আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান, অভিযোগ অস্বীকার নয়াদিল্লির      দেশি মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে হবে: মৎস্য উপদেষ্টা      জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ       গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: সমাজকল্যাণ সচিব      হাতি সংরক্ষণে প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা      
দেশজুড়ে
সদর হাসপাতালের বিজ্ঞাপন বোর্ডে এখনো হাসিনার ছবি
হারিছ আহমেদ, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫, ৬:১৪ পিএম
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মূল ভবনের সামনে বিজ্ঞাপন বোর্ডে এখনো ঝুলছে একটি সরকারি প্রচারপত্র, যেখানে শয্যার চেয়ে রোগী বেশি, ওষুধের অভাবে হাহাকার, টয়লেটের গন্ধে রোগীর শ্বাস বন্ধ হওয়ার অবস্থা। সেই হাসপাতালে এসে আপনি যদি দেখেন—২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নেওয়া হবে—এই বার্তাসহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত বিশাল পোস্টার, তখন প্রশ্ন না উঠে উপায় থাকে না।

কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের বিজ্ঞাপন বোর্ডে এখনো রয়ে গেছে সেই পুরনো স্লোগান। সময় বদলেছে, সরকারও প্রায় দুই দশক ধরে ক্ষমতায়, কিন্তু হাসপাতালের বিজ্ঞাপন বোর্ড বদলায়নি! যে ঘোষণার মেয়াদ শেষ হতে হতে প্রজন্ম বদলে যাবে, সেই ঘোষণা এখনো রোগীর চোখের সামনে ঝুলছে—যেন উন্নয়নের জাদুবাস্তবতায় চোখ ধাঁধিয়ে রাখা হচ্ছে বাস্তব দারিদ্র্য ও স্বাস্থ্যসেবার দৈন্যতা আড়াল করতে।

২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের বাস্তব চিত্র হলো—এখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই, নার্স সংকট চরমে, রোগী ভর্তি হওয়াও যুদ্ধের মতো। গরিব রোগীরা সামান্য ইনজেকশন বা স্যালাইন কিনতেই হিমশিম খায়, ফ্রি ওষুধের নামে চলে ফটকাবাজি। অথচ হাসপাতালের প্রবেশপথে চোখে পড়ে উন্নত দেশের স্বপ্ন বিক্রির এক বিশাল বিজ্ঞাপন।

হাসপাতাল কি দলীয় প্রচারণার জায়গা? সরকারি প্রতিষ্ঠান কি সরকার দলের প্রচার মাধ্যম হয়ে উঠবে? পোস্টারটি সরানোর মতো ন্যূনতম সদিচ্ছা কি কর্তৃপক্ষের নেই?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র নার্স বলেন, ‘রোগী দেখার সময় আমরা প্রায়ই বিব্রত হই—হাসপাতালের বাইরে উন্নয়নের বিজ্ঞাপন, সিনিয়রদের নজরে আসে না বিষয়টি ভিতরে পরিষ্কার টয়লেট নেই, গজব্যান্ডেজও বাইরে থেকে কিনতে হয়!

হাসপাতালে আসা একজন রোগীর স্বজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এখানে আসি চিকিৎসার জন্য, উন্নয়নের মিথ্যা গল্প শুনতে না। দেয়ালে পোস্টার দেখে মনে হয় দেশ সুইজারল্যান্ড, কিন্তু ভিতরে ঢুকলেই বোঝা যায়—আসল বাংলাদেশ কী

আরেকজন বলেন, যেখানে ডাক্তারদের ঠিকমতো খুঁজেই পাওয়া যায় না, সেখানে উন্নত দেশের পোস্টার হাস্যকর। এটা জনগণের চোখে ধুলো দেওয়া ছাড়া কিছুই না।

এ নিয়ে হাসপাতাল প্রশাসনের কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক সচেতন নাগরিক বলেন, এই ধরনের পোস্টার শুধুই রাজনৈতিক নয়, এটা জনগণের অনুভূতির অপমান। স্বাস্থ্যসেবার নামে ভাঁওতাবাজি বন্ধ করতে হবে।

এই ঘটনা আবারো প্রমাণ করে, দেশে উন্নয়নের নামে চালানো হচ্ছে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক প্রচারণা, যেখানে জনগণকে বাস্তব সেবার পরিবর্তে পোস্টার আর স্লোগান দিয়ে শান্ত রাখতে চাওয়া হয়।

হাসপাতাল তো উন্নয়নের পোস্টার টাঙানোর দেয়াল নয়, এটা মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার জায়গা। উন্নয়ন হলে তার প্রমাণ পোস্টারে নয়—সেবায়, ব্যান্ডেজে, ওষুধে, বাঁচা-মরার লড়াইয়ে।

কেকে/এএস


মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

গ্যাস সংকটে ঝুঁকিতে বিনিয়োগ-রফতানি
মনোনয়নপত্র জমাদানে উৎসবমুখর পরিবেশ
ভারতে আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান, অভিযোগ অস্বীকার নয়াদিল্লির
১০ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক
‘ডোর টু ডোর’ প্রকল্পের সেরা পারফর্মারদের পুরস্কার বিতরণ

সর্বাধিক পঠিত

স্যুটার মান্নান হত্যা মামলার আসামি জুয়েল আটক
গতি বাড়াতে সমন্বয় টিমের মাধ্যমে কাজ করতে চাই: সমাজকল্যাণ সচিব
নীলসাগর গ্রুপের ‘ডোর টু ডোর’ প্রকল্পের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত
১০ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক
নওগাঁয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালন

দেশজুড়ে- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close