বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫,
৬ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
শিরোনাম: ইতা‌লির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির ঢাকা সফর বাতিল      সাগর-রুনির পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হলো রাজউকের প্লট      মহানবী (সা.) এর সিরাতই তরুণদের চরিত্র গঠনের রোল মডেল: ধর্ম উপদেষ্টা       নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য জরুরি      ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু      ‘আমি সিক্স পার্সেন্টে কাজ করেছি’, উপদেষ্টা আসিফের প্রেস সেক্রেটারির অডিও ফাঁস      আবারো সংঘর্ষে ঢাকা-সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা      
আন্তর্জাতিক
ইরানের বিজয়, ইসরায়েলের পরাজয়
ইরানে সব লক্ষ্যই ব্যর্থ নেতানিয়াহুর
খোলা কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ১১:২৩ এএম আপডেট: ২৫.০৬.২০২৫ ১১:২৫ এএম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে নেতানিয়াহুর সব লক্ষ্যই ব্যর্থ হয়েছে, ইরানে যা করতে চেয়েছিলেন তার উল্টো ঘটেছে।

ইরানের সঙ্গে টানা ১১ দিন যুদ্ধ করেছে দখলদার ইসরায়েল। যা ১২তম দিনে শেষ হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা ইরানে যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জন করেছেন।

স্বল্পমেয়াদি এ যুদ্ধের শুরুতে নেতানিয়াহু দুটি লক্ষ্য ঠিক করেছিলেন— ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম ধ্বংস ও দেশটির সরকারের পতন ঘটানো।

কিন্তু পারমাণবিক অবকাঠামো কি ধ্বংস হয়েছে? উত্তর খুব সম্ভবত ‘না’। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত ফর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েও সেটি ধ্বংস করতে পারেনি। এমনকি সেখানে যেসব সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়ামের মজুদ ছিল সেগুলোও আগে সরিয়ে ফেলে তেহরান। এই ইউরেনিয়াম পারমাণবিক কার্যক্রমের সবচেয়ে বড় উপাদান। যেহেতু এগুলো অক্ষত আছে। তার অর্থ দখলদার ইসরায়েলের এ লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরান সেটি কখনো প্রকাশ করতে দেবে না।

ইসরায়েল কি ইরানের সরকার পতন ঘটাতে পেরেছে? সহজ উত্তর ‘না’। যুদ্ধের শুরুতে ইসরায়েলিরা ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে। তাদের লক্ষ্য ছিল এরমাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা এবং সাধারণ মানুষকে উস্কে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটানো।

ইসরায়েলের একটি ধারণা আছে, শত্রুদের ঘায়েল করার সবচেয়ে বড় উপায় হলো তাদের উচ্চপদস্থ নেতাদের গুপ্তহত্যা করা। ইসরায়েল সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে এক্ষেত্রে সফলতা পেয়েছিল। কিন্তু অন্য আর কোথাও পায়নি। ইরানে এ কৌশল পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের যখন ইসরায়েল হত্যা করল তখন দেশটির সাধারণ মানুষ তাদের পক্ষে উল্টো একত্রিত হয়েছে।

ইসরায়েল ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধানকে হত্যা করেছে। যাকে ইরানের অনেক মানুষই পছন্ত করতেন না। কিন্তু তিনি হত্যার শিকার হওয়ার পর, যারা তাকে অপছন্দ করতেন তারাও বিপ্লবী গার্ডকে সমর্থন করা শুরু করেন। কারণ ইরানিরা দেখতে পান দখলদার ইসরায়েল শুধুমাত্র ইরানের সরকারি অবকাঠামো নয়, পুরো ইরানের ওপর হামলা চালাচ্ছে।

ইসরায়েল ইরানের এভিন কারাগারে বোমা ছুড়েছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল কারাগারে থাকা রাজবন্দিদের মুক্ত করে ইরানে অভ্যুত্থান ঘটানো। কিন্তু এর ফলাফল হয়েছে উল্টো। যারা কারাগারে ছিলেন তাদের কয়েকজনকে এখন অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে ইরানি বাহিনী।

ইসরায়েল ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে হামলা চালিয়েছে। এটি ছিল ‘অদ্ভুদ’ বিষয়। তারা বলছিল এখান থেকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছিল। কিন্তু এ হামলার পর ইরানিরা ইসরায়েলি টিভি স্টেশনকে হুমকি দেওয়া শুরু করে।

ইসরায়েল কি বিশ্ববাসীকে পাশে পেয়েছে? উত্তর ‘না’। যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলিরা পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছে। এই হামলার পর জার্মান চ্যান্সেলর সবার আগে এটির বৈধতা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশ এতে এতটা সম্মতি দেননি। এছাড়া ইরান কোনো ইউরেনিয়ামের মজুদই রাখতে পারবে না যে শর্ত ইসরায়েল দিয়েছিল সেটিতেও বিশ্ববাসী কর্ণপাত করেনি।

বিশ্ব নেতারা বলেছেন, বেসামরিক কাজের জন্য ইউরেনিয়াম মজুদ করলেও, ইরান কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। ইরান জানিয়েছে, তারা এক্ষেত্রে সহায়তা করতে প্রস্তুতই আছে।

এছাড়া দখলদারদের হামলার পর এখন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মনে করছে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য করা তাদের জন্য বৈধ। যা ইসরায়েলিদের জন্য পরাজয়। অপরদিকে ইরানের বিজয়।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল অল্প সময়ের মধ্যে ইরানের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ নিতে সমর্থ হয়। এতে করে তারা যেখানে খুশি হামলা চালাতে পেরেছে। কিন্তু ইরানও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে মিসাইল ছুড়েছে। যেগুলো তাদের ‘জনপ্রিয়’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েলি শহরের প্রাণকেন্দ্রে সরাসরি আঘাত হেনেছে। এবং সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটিয়েছে।

যুদ্ধ চলতে চলতে ইসরায়েলিদের প্রতিরক্ষা মিসাইল ফুরিয়ে আসছিল। অর্থাৎ সময় আর কিছুদিন গেলে ইরানের মিসাইল আটকানোর ক্ষমতাই আর তাদের থাকত না। মিসাইলগুলো এত দ্রুত কমছিল যে সেগুলো আবার কম সময়ের মধ্যে ইসরায়েলের জন্য পাওয়াও সম্ভব ছিল না। অর্থাৎ একটা সময়ে গিয়ে ইরানের মিসাইল আটকানোর ক্ষমতা হারাত তারা।

এছাড়া যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলি অর্থনীতি পুরোপুরি থমকে যাওয়ার পথে ছিল। যা ইরানের জন্য আরেকটি বিজয়।

ইসরায়েলের হামলায় ইরানও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের অনেক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু ইরান চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়নি ইসরায়েলের মতো এত বড় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেও।

ইরানের মিসাইল ইসরায়েলি ভবনগুলো আঘাত হানায় ইরানের ‘ইমেজ’ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তাদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে আগে থেকে জানিয়ে ইরান কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে মিসাইল ছোড়ে। এরমাধ্যমে তারা মূলত ‘দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে’ পড়া আটকায়।

এছাড়া যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর দখলদার ইসরায়েল যখন ইরানে আবারও হামলা করতে যাচ্ছিল। তখনও ইরানের যথেষ্ট শক্তি ছিল ট্রাম্পকে বলার জন্য, ইসরায়েল যেন নতুন করে আর হামলা না চালায়।

লেখা : ওরি গোল্ডবার্গ, স্বাধীন বিশ্লেষক

সূত্র: আলজাজিরা

কেকে/এআর
আরও সংবাদ   বিষয়:  সব লক্ষ্যই ব্যর্থ নেতানিয়াহুর   ইরানের বিজয়   ইসরায়েলের পরাজয়  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে শ্বশুরের বিরুদ্ধে পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ
জাকসু নির্বাচনে শিবিরের নেতৃত্বে প্যানেল ঘোষণা
ইতা‌লির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির ঢাকা সফর বাতিল
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
বিদ্যুতের তার যেন চড়ুই পাখির অভয়াশ্রম

সর্বাধিক পঠিত

মদনে স্ত্রীর নির্যাতন মামলায় সাবেক কমিশনার গ্রেফতার
জয়পুরহাটে বজ্রপাতে আলু ব্যবসায়ীর মৃত্যু
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কৃষি সংস্কার ও খাদ্য নিরাপত্তার অভিযাত্রা
‘আমি সিক্স পার্সেন্টে কাজ করেছি’, উপদেষ্টা আসিফের প্রেস সেক্রেটারির অডিও ফাঁস
জামালপুরে পূবালী ব্যাংকের সহযোগিতায় আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

আন্তর্জাতিক- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close