সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় ইউক্যালিপটাস গাছের রোপণ ও বিস্তার বেড়েই চলেছে। এতে পরিবেশ ও কৃষিজমিতে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ইউক্যালিপটাস গাছের চারা রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
কালাই উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় আবাদি জমি, বসতবাড়ি ও সড়কের দুই পাশে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানোর প্রবণতা বেড়েই চলেছে। দ্রুত বৃদ্ধির কারণে লোভে পড়ে স্থানীয়রা এই গাছ রোপণ করছেন, যদিও তা পরিবেশ ও কৃষির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় জানান, ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা মাটিকে বিষাক্ত করে, যা ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এই গাছ অতিরিক্ত পানি শোষণ করে জমি শুষ্ক করে ফেলে এবং পোকামাকড় ও পাখিদের জন্যও ক্ষতিকর। ফলে জমিতে ঘাস ও লতাপাতা জন্মায় না, কৃষিজ উৎপাদন হ্রাস পায়, পরিবেশে তাপমাত্রা বাড়ে।
হাতিয়র গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, ক্ষতির কথা জানতাম না, তাড়াতাড়ি বড় হয় দেখে লাগিয়েছিলাম। এখন জমির আবাদ কমে গেছে, পাতা পড়ার জায়গায় মাটি কালো হয়ে যায়।
জিন্দারপুরের কৃষক ফিরোজ জানান, রাস্তার দুই পাশে বন বিভাগ ইউক্যালিপটাস লাগিয়েছে। আমাদের জমিতেও লাগিয়েছি। ফলন কমে গেছে, বেশি সার দিলেও ধান কম হয়।
আলাউদ্দিন নামে আরো এক কৃষক বলেন, আগে জানলে এই গাছ লাগাতাম না, এখন বুঝতে পারছি এর ক্ষতি কত ভয়াবহ।
উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. হারুন রশীদ বলেন, আমরা ইউক্যালিপটাস গাছের উৎপাদন ও রোপণে নিরুৎসাহিত করছি। এই গাছ পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর পাতা সহজে পচে না, জমির পুষ্টি নষ্ট হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালেই ইউক্যালিপটাস গাছের চারা উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ করা হয়। তারপরও কালাইয়ে এর রোপণ বেড়েই চলেছে।
কেকে/এএম