চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোনো কোম্পানিকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘আত্মঘাতী’ ও ‘অদূরদর্শী’ বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
তিনি বলেন, জাতীয় অর্থনীতির প্রধান লাইফলাইন চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। দেশের নিরাপত্তার সাথে যুক্ত প্রধান সমুদ্রবন্দর বিদেশি কোম্পানির তত্ত্বাবধানে দেওয়ার তৎপরতা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে সেগুনবাগিচায় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত রাজনৈতিক পরিষদের সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোনো কোম্পানিকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ কোনো সরকার নিতে পারে না। তা ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের এত বড় জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এক্তিয়ার নেই।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর আমাদের অর্থনীতির প্রধান লাইফলাইন। জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ও এর সঙ্গে যুক্ত। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কথা বলে বিদেশি কোম্পানির হাতে বন্দরের ব্যবস্থাপনা তুলে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে লিজ দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে—এমন খবরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এটি পুরোপুরি অনাকাঙ্ক্ষিত ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি পদক্ষেপ।
তিনি আরো বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে ওঠা দেশের বৃহত্তম কনটেইনার পোর্ট এনসিটি গত ১৭ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে লাভজনকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিশ্বের সর্বাধুনিক গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় আরও আধুনিক প্রযুক্তি আমদানি করা সম্ভব। জাতীয় সক্ষমতা অর্জনের এই পথে না হেঁটে সরকার যে বিদেশ নির্ভরতার পথে হাঁটছে, তা মেনে নেওয়া যাবে না।
আমরা উৎপাদনশীল বিনিয়োগের পক্ষে। কিন্তু যে বিনিয়োগ বা বন্দর ব্যবস্থাপনা জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, বলেন তিনি।
সাইফুল হক সরকারকে জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি সৃষ্টিকারী এ ধরনের সকল তৎপরতা থেকে সরে আসতে আহ্বান জানান।
সভায় পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক উপস্থিত ছিলেন।
সভায় দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
কেকে/এএম