শনিবার, ৩ মে ২০২৫,
২০ বৈশাখ ১৪৩২
বাংলা English

শনিবার, ৩ মে ২০২৫
শিরোনাম: বেপরোয়া বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিরোধ      মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন বেগম খালেদা জিয়ার      ‘দেশে স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে’      ভারতে স্কুলের খাবারে মরা সাপ, খেয়ে অসুস্থ শতাধিক শিশু      অর্থনীতির জন্য আগামী সাত মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: প্রেস সচিব      খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন ৫ মে      কাশ্মীর সীমান্তে টানা ৮ম দিনেও ভারত-পাকিস্তানের গোলাগুলি      
স্বাস্থ্য
পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল ফার্মাসিস্টের বিকল্প নেই
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ৭:৩২ পিএম  (ভিজিটর : ৮১)
ছবি : প্রতিবেদক

ছবি : প্রতিবেদক

পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে হাসপাতাল ফার্মাসিস্টদের বিকল্প নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, ‘ডাক্তার-ফার্মাসিস্ট-নার্স’ এই ত্রিমুখী সহযোগিতামূলক মডেল উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একমাত্র গ্রহণযোগ্য কাঠামো হিসেবে বিবেচিত। প্রত্যেক ২৫ শয্যার হাসপাতালের জন্য একজন গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট থাকা আবশ্যক। অথচ দেশের ৬৫৪টি সরকারি হাসপাতালে মোট ৫১ হাজার ৩১৬টি শয্যা থাকলেও সেখানে একজনও গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিযুক্ত নেই, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স এবং হেলথ টেকনোলজিস্ট থাকলেও, সঠিকভাবে ওষুধ সংরক্ষণ, রোগীর জন্য উপযুক্ত ওষুধ নির্বাচন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের উপস্থিতি অত্যাবশ্যক। এ ঘাটতি স্বাস্থ্যসেবার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

শুক্রবার (২ মে) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিল আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের হাসপাতাল ফার্মাসি কমিটির সভাপতি মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।

স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতাল ফার্মাসিস্টদের গুরুত্ব এবং সরকারি হাসপাতালে তাদের নিয়োগ নিশ্চিতকরণ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান এবং কাউন্সিলের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান। সভায় আন্তর্জাতিক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. ইউ লি চ্যাং এবং জাতীয় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষা ও স্বীকৃতি কমিটির বিশেষজ্ঞ সদস্যবৃন্দ, হাসপাতাল ফার্মেসি কোর্সের শিক্ষকবৃন্দ, বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ফার্মাসিস্ট এবং ফার্মেসী কাউন্সিলের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা।

সভায় বক্তারা জানান, দেশের ওষুধ শিল্পে ফার্মাসিস্টরা এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন। বর্তমানে দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলো অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত হতে হলে প্রথমেই ফার্মাসিস্টদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন।’ তিনি জানান, সরকার ৭০০টি ফার্মেসি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা দায়িত্ব পালন করবেন। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ফার্মাসিস্টদের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন। একইসঙ্গে সরকারি হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ‘আধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট ছাড়া মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা অসম্ভব।’ তিনি জানান, দেশে এখনো গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট ছাড়া ওষুধ সংরক্ষণ ও বিতরণ কার্যক্রম চলছে, যা ঝুঁকিপূর্ণ। গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিযুক্ত হলে ডাক্তার-নার্স-ফার্মাসিস্ট সম্মিলিতভাবে স্বাস্থ্যসেবায় গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন।

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, ‘জাতীয় ওষুধনীতি ২০১৬-এর ৪.৩ অনুচ্ছেদে ওষুধের যৌক্তিক ও নিরাপদ ব্যবহারের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’ উপ-অনুচ্ছেদ ‘ঙ’-এ বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে ধাপে ধাপে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের তত্ত্বাবধানে ফার্মেসি পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি আরো বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধের সুরক্ষা ও অপব্যবহার রোধে বহির্বিভাগ ফার্মেসিতে ১ জন এবং প্রতি ৫০ শয্যার জন্য ১ জন করে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ ও তাদের জন্য পেশাগত পদবিন্যাস -(ফার্মাসিস্ট (ক্লিনিক্যাল/ইন-চার্জ) > সিনিয়র ফার্মাসিস্ট > উপ-প্রধান ফার্মাসিস্ট > প্রধান ফার্মাসিস্ট)-নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘ওষুধের নিরাপদ ও যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে হাসপাতাল ফার্মাসিস্টের ভূমিকা অপরিহার্য। সরকার ইতোমধ্যেই ৭০০টি সরকারি ফার্মেসি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা নিয়োজিত হবেন।’

বক্তারা বলেন, উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক করা উচিত। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী সঠিক ওষুধ বাছাই, রোগীকে ওষুধ ব্যবহারের সঠিক নির্দেশনা প্রদান এবং সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করার কাজ একজন প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্টই দক্ষতার সঙ্গে করতে পারেন।

তারা আরো বলেন, দেশের ১৮ কোটি জনগণের জন্য মাত্র ৬৫৪টি সরকারি হাসপাতাল আছে, যেখানে ৫১ হাজারের বেশি শয্যা রয়েছে। কিন্তু এত বড় পরিসরে একজনও গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট না থাকায় রোগীরা ভুল ওষুধ গ্রহণ করে ক্ষতির মুখে পড়ছেন, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  স্বাস্থ্যসেবা   হাসপাতাল   ফার্মাসিস্ট   বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সরকারি হাসপাতালে নেই গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট
বেপরোয়া বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিরোধ
বিএনপি নেতার নেতৃত্বে অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ
রুয়া নির্বাচন: নতুন অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন
ফুলবাড়ীতে মাদক ব্যবসায়ী পিতা-পুত্র গ্রেফতার

সর্বাধিক পঠিত

সালথায় নসিমন-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ গেল কলেজছাত্রের
মতলব উত্তরে তৃণমূলের অংশগ্রহণে কমিটি গঠনের দাবিতে বিএনপির গণমিছিল
প্রকৌশলী তুহিনের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
লোহার পাটাতন দিয়ে জোড়াতালির কালভার্ট, মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ
রায়গঞ্জে আয়না ঘরের সন্ধান, মুক্তি পেলেন নিখোঁজ বৃদ্ধ ও গৃহবধূ

স্বাস্থ্য- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close